• E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন

×

সাতক্ষীরার আমে চাঙ্গা হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি

  • প্রকাশিত সময় : রবিবার, ১২ মে, ২০২৪
  • ৩৪ পড়েছেন

মনিরুল ইসলাম মনি, সাতক্ষীরা :
সাতক্ষীরার হাটবাজারে বিভিন্ন প্রজাতির আম বিপণন শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসন ঘোষিত আমের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শনিবার থেকে দ্বিতীয় দফায় সাতক্ষীরায় গাছ থেকে সুস্বাদু গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ আম ছাড়ানো শুরু হয়েছে। তাই মধু মাস জ্যৈষ্ঠ আসার অগেই সাতক্ষীরার বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বৈশাখী, গোলাপ খাস, খিরসরাইসহ সুস্বাদু বিভিন্ন প্রজাতির আম। বৈরী আবহাওয়ায় এ বছর আমের উৎপাদন কম হওয়ায় গত বছরের তুলনায় আমের বাজার অনেক চড়া। মৌসুমের শুরুতেই বাজারে আম উঠায় চাহিদাও একটু বেশি। সাতক্ষীরার বৃহত আমের হাট বড়বাজারে রাজধানী ঢাকা, রাজশাহী, চট্রগ্রাম, খুলনাসহ আসপাশের জেলা থেকে ব্যাপারি আসায় নানামুখী কর্মজজ্ঞে মেতে উঠেছে শত শত চাষি ও ব্যবসায়ীরা। চাঙ্গা হয়ে উঠেছে গ্রামীণ অর্থনীতি। প্রতিমন গোবিন্দভোগ ও গোপালভোগ আম বিক্রি হচ্ছে ২২০০ থেকে ২৬০০ টাকা মন দরে। ৯মে থেকে সাতক্ষীরায় আনুষ্ঠানিক ভাবে জেলা প্রশাসক ও কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্ততরের আয়োজনে পারকুকরালী মনির হোসেন হাজী ও আম ব্যবসায়ী মোকছেদ মোড়লের বাগানের গাছ থেকে পরিপক্ত পাকা আম সংগ্রহ শুরু হয়। দ্বিতীয় দফায় ১১ মে শনিবার গাছ থেকে গোবিন্দভোগ আম ছাড়ানো শুরু হওয়ায় সাতক্ষীরার সর্ব বৃহত আমের হাট সুলতানপুরের বড়বাজার, কলারোয়া উপজেলার বেলতলাসহ বিভিন্ন হাটবাজারে প্রচুর পরিমানে আম উঠতে শুরু করেছে। গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, গোলাপখাস, ক্ষিরসরাইসহ নানা জাতের আম প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ ও ৭০ টাকা দরে। গুনগত মানের উপর নির্ভর করে আম বিক্রি হচ্ছে। কৃষক ও আড়ৎদাররা বলছে আবহাওয়া ও তাপ প্রবাহের কারণে এ বছর আমের ফলনও কম হয়েছে। তাই মৌসুমের শুরুতে আমের দামও অনেক চড়া। চাহিদাও অনেক বেশি। রাজশাহী থেকে আসা অনলাইন উদ্যোক্তা উত্তরবঙ্গ ই-বাজারের সত্বাধিকারী মাসুদ রানা সাতক্ষীরা আম অনেক সুস্বাদু ও এখানকার আমে কদর বিশ্বব্যাপী। তাই রাজশাহী থেকে সরাসরি পরিপক্ক ক্যামিক্যাল মুক্ত আম কিনতে সাতক্ষীরায় এসেছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর আমের বাজার অনেক চড়া। আবার চাহিদাও অনেক বেশি। গত বছর প্রতি মন গোবিন্দভোগ আম ক্রয় করেছি ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকা দরে। এবছর তা ২৪০০ থেকে ২৬০০ টাকা মন দরে কিনতে হচ্ছে। বাইরে থেকে ব্যাপারী অনেক বেশি আসায় তাই বাজার অনেক চড়া। খুলনা থেকে আসা কাফেলা অন-লাইনের সত্বাধিকারী শরিফুল ইসলাম হিরণ জানান, আবহাওয়া ও মাটির গুনগত কারনে সাতক্ষীরার আম আগে ভাগে পাকে। তাই দেশব্যাপী এখানকার আমের চাহিদা অনেক বেশি। খেতেও অনেক সুস্বাদু। সে কারনে মৌসুমের শুরুতে আম কিনতে ও সংগ্রহ করতে সাতক্ষীরাতে আসি। এ খান থেকে পরিপক্ক বিশমুক্ত আম ক্রয় করে তা অন-লাইন-বীজনেসের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রয় করে থাকি। তবে গত বছরের তুলনায় এবছর আমের বাজার মূল্য ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা বেশি দাম চাচ্ছে আড়ৎদাররা। ঢাকা, রাজশাহী, খুলনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে সাতক্ষীরার বড় বাজার, কলারোয়া উপজেলার বেলতলা, তালা উপজেলার পাটকেলঘাটায় ব্যাপারী আসতে শুরু করেছে। গাছ থেকে আম ছাড়ানো, ঝুড়ি তৈরি, বাইন্ডিং আড়তিকরণ থেকে শুরু করে ট্রাক বোঝায় পর্যন্ত নানামুখী কর্মজজ্ঞে মেতে উঠেছে বাজারের শত শত চাষি ও ব্যবসায়ীরা। চাঙ্গা হয়ে উঠেছে গ্রামীণ অর্থনীতি। তবে সাধারণ আম চাষীরা গত বছরের তুলনায় মনপ্রতি ৮’শ থেকে ১ হাজার টাকা বেশি দরে আম বিক্রি করতে পেরে তারা এবছ বেজায় খুশি। সাতক্ষীরা শহর কাঁচা ও পাকা মাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রমজান আলী ও সাধারণ সম্পাদক রজত আলী খাঁ জানান, এ বছর জেলায় আমের আবাদ কম হয়েছে। অতিরিক্ত তাপদাহে ও বৈরী আবহায় অধিকাংশ আমের আকার ছোট ও বাগানে ফলন কম হয়েছে। আমের বাজার অনেক চড়া। ফলন উৎপাদন তুলনা মূলক একটু কম হলেও এ জেলার উৎপাদিত আম ২৫০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি সস্প্রসারন অধিদপ্তর সাতক্ষীরা খামারবাড়ি এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম জানান, এ বছর সাতক্ষীরার ৪ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে কৃষকরা বিষমুক্ত আমের আবাদ করতে সক্ষম হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ২৫০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা। তিনি আরও জানান, নিদিষ্ট সময়ের আগে গাছ থেকে অপরিপক্ক আম সংগ্রহ করার অভিযোগে ও রাজধানী ঢাকার মারকেটগুলোতে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় জেলায় এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ মেট্রিক টন আম জদ্ব করে তা ধ্বংস করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অফিসার মোঃ মনির হোসেন জানান, গত বছর ১৭০ মেট্রিক টন আম ইউরোপের বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন বায়ার কোম্পানিগুলো রপ্তানি করে। এ বছর হিমসাগর, লেংড়াসহ ৩০০ মেট্রিক টন আম ফ্রাস, ইটালিসহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বাজারে রপ্তানি হবে। জেলা প্রশাসক ও কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের ক্যালেন্ডার অনুযায়ি আগামি ২২ মে হিমসাগর ও ২৯ মে লেংড়া এবং ১০ জুন গাছ থেকে আম্রপালি আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করা হবে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA