• E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৭ অপরাহ্ন

×

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জেতা সম্ভব

  • প্রকাশিত সময় : রবিবার, ৯ জুন, ২০২৪
  • ২৮ পড়েছেন

ড. সাঈদুর রহমানের কলামঃ

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে তার সবকটিতেই পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ। সেই বৃত্ত ভেঙে এখন সময় এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম জয় তুলে নেওয়ার। দক্ষিণ আফ্রিকার দুটি ম্যাচ খেলে দুটিতে জয়লাভ করেছে। তবে প্রতিপক্ষের স্বল্প রান চেজ করে খুব সহজ হয়নি তাদের জয়। তাই বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব ভালো ক্রিকেট খেলে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পরাজিত করা।
নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। আয়োজক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যথেষ্ট বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছে নাসাউ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে। নাসাউ-এর এই ড্রপ ইন পিচে ব্যাটিং করা সত্যিই কঠিন।নেদারল্যান্ডসের মাত্র ১০৩ রান টপকাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬টি উইকেট হারাতে হয়েছিল। এর আগে এই উইকেটে শ্রীলংকা অলআউট হয়েছিল মাত্র ৭৭ রানে। সেদিনও শ্রীলংকার এই ৭৭ রান টপকে যেতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪ উইকেট হারাতে হয়েছিল। নাসাউ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতে ব্যাটিং করা ব্যাটসম্যানদের জন্য দুঃস্বপ্নের মতো। তাই টসে জিতলে বাংলাদেশের উচিত হবে প্রথমে ফিল্ডিং নেওয়া। পেস বোলাররা উইকেটের দু’পাশেই স্যুইং পেতে পারেন, তাছাড়া আনইভেন বাউন্স ব্যাটসম্যানদের জন্য মাথাব্যথার কারণ। তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান এবং তানজিম হাসান সাকিব – তিনজনই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ভালো বল করেছেন। শরিফুল ইসলাম দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ম্যাচে খেলতে পারেন। ভারতের বিরুদ্ধে প্র্যাকটিস ম্যাচে তার হাতের তালুতে যে ছ’টি সেলাই লেগেছিল, সেই ক্ষত তার মোটামুটি সেরে গেছে। সেক্ষেত্রে তানজিম হাসান সাকিবকে ড্রপ করা হতে পারে। মুস্তাফিজুর রহমান অসাধারণ বল করেছেন শ্রীলংকার বিরুদ্ধে। তার আইপিএলের অভিজ্ঞতা ভালোই কাজে লাগছে। সিম বোলারদের পাশাপাশি স্পিনাররাও উইকেট থেকে কিছুটা সহযোগিতা পেতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের একমাত্র স্পিনার কেশব মহারাজ। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ দলে সাকিব আল হাসান এবং রিশাদ হোসেনের সাথে মাহমুদ‌উল্লাহ রিয়াদকেও ১/২ ওভার বল করতে দেখা যেতে পারে। রিশাদ হোসেন হয়তো বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের দীর্ঘদিনের আক্ষেপ মেটাতে এসেছেন। দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ একজন লেগ স্পিনারের প্রতীক্ষায় ছিল। রিশাদ তার প্রথম বিশ্বকাপেই সেই প্রত্যাশার অনেকটা প্রতিদান দিতে সক্ষম হলেন। লেগ স্পিনারদের ক্ষেত্রে শর্ট বল, ফুল টস বল হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু শ্রীলংকার বিরুদ্ধে দারুণ সংযমী বোলিং করে তিনি সবাইকে মুগ্ধ করেছেন। মাত্র ২১ বছর বয়সী এই লেগ স্পিনার যেভাবে শ্রীলংকার বিরুদ্ধে লাইন এবং লেন্থ ঠিক রেখে বল করে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ সেরা হয়েছেন, তাতে অনেক কিছু পেয়ে গেছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রান চেক দেওয়া একজন বোলারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সাথে উইকেট পেলে তো কথাই নেই। দুই ক্ষেত্রেই সাফল্য দেখিয়েছেন রিশাদ। একজন লেগ স্পিনার যেকোনো দলের জন্যই অনেক বড় সম্পদ, তার উপর রিশাদ হোসেন যথেষ্ট ভালো ব্যাটিং করতে জানেন। একজন টেল এন্ডার হিসেবে যেকোনো সময় তার সেই ব্যাটিং দলের অনেক বড় প্রয়োজনীয়তা হিসেবে দেখা দিতে পারে।

টপ অর্ডারের ব্যাটিং নিয়ে সমস্যা যাচ্ছেই না বাংলাদেশ দলের। সৌম্য সরকার ইতিমধ্যেই শূন্য রানের রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে ১৩ বার ০ রানে আউট হয়ে আয়ারল্যান্ডের পল স্টারলিংয়ের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন তিনি। তবে স্টারলিং এর চেয়ে অনেক কম ম্যাচ খেলেই তিনি ১৩ বার ০ রানে আউট হয়েছেন। সৌম্য সরকার ৮৪ ম্যাচ খেলে ১৩ বার ০ রানে আউট হয়েছেন। অন্যদিকে পল স্টারলিং ১৪৪ টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ১৩ বার ০ রানে আউট হয়েছেন। লিটন দাস গত ম্যাচে ৩৬ রান করলেও স্ট্রাইক রেট ছিল একশ’র নিচে। টি-টোয়েন্টিতে একজন ওপেনারকে দেড়শ বা দুইশ স্টাইকরেটে ব্যাট করতে হবে। তবেই দল তার কাছ থেকে কিছুটা হল নির্ভরতা পাবে। নাজমুল হোসেন শান্ত কিছুতেই ব্যাডপ্যাচ কাটাতে পারছেন না। ফলে দলও চাপে রয়েছে। সাকিব আল হাসান গত ম্যাচে খুবই খারাপ করেছেন। কিন্তু সাকিবের মতো খেলোয়াড় সবসময়ই খারাপ করবেন না। এই ম্যাচেই হয় ব্যাটে না হয় বলে, সাকিবকে আমরা পারফর্ম করতে দেখবো। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকে জয়ী হিসেবে দেখার প্রত্যাশা খুব বেশি অমূলক কিছু হবে না।

লেখক: জাতীয় ক্রীড়া ভাষ্যকার, বেতার ও টেলিভিশন।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA