• E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৬ অপরাহ্ন

×

পদ্মা সেতু ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতি

  • প্রকাশিত সময় : শুক্রবার, ১০ জুন, ২০২২
  • ১৭৫ পড়েছেন

এক সময়ের খাদ্যসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যে পরনির্ভরশীল দেশ, একটি কালভার্ট নির্মাণেও যে দেশকে হাত বাড়াতে হতো ‘দাতা-উন্নয়ন সহযোগীদের’ কাছে-তাদের এমন অর্জন! নিজেদের অর্থে এত বড় প্রকল্পের বাস্তবায়ন! প্রকৃতই বলা যায় একাত্তরের চেতনা, পদ্মা সেতুর চেতনা!! পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের অর্থনীতিতে এক অভুতপূর্ব সাফল্য যোগ হয়েছে। কেবল দক্ষিণাঞ্চল নয়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হিসেবে পরিচিত খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর অর্থনীতির জন্য এ প্রকল্প সৃষ্টি করবে সম্ভাবনা- যা অশেষ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন না করা প্রসঙ্গে বলেছেন, পদ্মা সেতু হচ্ছে বাঙালি জাতিকে অপমান করার প্রতিশোধ। বিশ্বব্যাংক দুর্নীতি এবং চুরির অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, জয়, পুতুুল ও ববিসহ বঙ্গবন্ধুর গোটা পরিবারকে অপমান করেছে বিশ্বব্যাংক। অপবাদ দিয়েছে, বাঙালির বীরত্ব এবং সম্মানকে ক্ষুন্ন করেছে। তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতু শুধু আমাদের সামর্থ্য এবং সক্ষমতার সেতু নয়, এই সেতু আমাদের অপমানের প্রতিশোধ।

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, পদ্মা সেতু শেখ হাসিনার অদম্য সাহসের এক সোনালি ফসল। শেখ হাসিনার সততা সাহসিকতার প্রতীক পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু বাঙালি জাতির অহংকার এবং গৌরবের প্রতীক। এর ফলে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের অর্থনীতিতে এক অভুতপূর্ব সাফল্য যোগ হয়েছে।

দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের বাংলাদেশের একটি অর্থনৈতিক জোন হিসেবে আবহমান কাল হতেই পরিচিত। বিশেষ করে খুলনাঞ্চল শিল্প ও বানিজ্যের দিক থেকে অন্যান্য অঞ্চল থেকে এগিয়ে। পদ্মা চালু হলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে উন্নয়নের যে অপরিমেয় চাহিদা সৃষ্টি হবে, তার সঙ্গে মানবসম্পদ জোগানের সামঞ্জস্য সৃষ্টি হবে। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নতুন উদ্যোক্তার সৃষ্টি হবে।

পদ্মা সেতু রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর দূরত্ব অনেক কমিয়ে দেবে। ঢাকা থেকে সড়ক পথে চট্টগ্রামের দূরত্ব ২৫০ কিলোমিটার। বন্দরের দূরত্ব আরও বেশি। পদ্মা সেতু পথে ঢাকা থেকে মংলা বন্দরের দূরত্ব এর চেয়ে কম। সেতু পথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর সঙ্গে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব কমবে ১০০ কিলোমিটার কিংবা তারও বেশি। এর ফলে রাজধানিসহ সারাদেশে স্বল্প ব্যয়ে মানুষ ও পণ্য পরিবহনে সময় ও অর্থ দুইই বাঁচবে। ঢাকা-মাওয়া সড়ক পথ নতুর রূপ পেয়েছে। যারা এ পথে নিয়মিত চলাচল করছেন তাদের কাছে এ পথ যেন ইউরোপ-আমেরিকার মহাসড়ক। এ পথ ব্যবহার করে খুলনাসহ বরিশাল, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর প্রভৃতি জেলার বাসিন্দারা প্রতিদিন নিজের বাড়িতে থেকেই ঢাকায় অফিস করতে পারবেন। রেলপথ চালু হলে বরিশাল, খুলনা বা যশোর থেকে দেড়-দু’ঘণ্টাতেই ঢাকা যাওয়া আসা করা যাবে। অনেকে ভাবছেন- প্রতিদিন ঢাকায় অফিস করা যাবে বরিশাল-ফরিপুরের গ্রামের বাড়িতে থেকেই। এর ফলে রাজধানীর ওপর মানুষের চাপ কমবে।

২৫জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে চালু হবে। এ সেতু জাতীয় মর্যাদার প্রতীক। বর্তমান সরকারের কাছে এ প্রকল্প ছিল বড় চ্যালেঞ্জের। রাজনৈতিক পরিষরে অনেকেই মনে করছে এ প্রকল্প চালু হলে বর্তমান সরকারের প্রতি জনসমর্থন বাড়বে।

অনেওেকই প্রশ্ন তুলেছেন পদ্মা সেতুর টোল নিয়ে। কিন্তু বিগতদিনে সকল সেতুর টোল নির্ধারণের নিয়ম অনুসারেই এর টোল নিধারণ করেছে সেতু মন্ত্রনালয়। সাবিক বিবেচনায় দেখা যায় এরফলে মানুষের পণ্য পরিবহণসহ মানুষের যাতায়াতে সময় ও অর্থ দুইই বাঁচবে। সেতু চালু হলে প্রতিদিন ২৫ হাজারের মতো গাড়ি চলবে।

পদ্মা সেতু চালু হলে মংলা বন্দর ও পায়রা বন্দর চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের তুলনায় অনেক কাছে হবে। এমনকি রাজধানী ঢাকার অনেক ব্যবসায়ীও আমদানি-রফতানির জন্য চট্টগ্রামের পরিবর্তে মংলা বন্দর ব্যবহারে উৎসাহী হচ্ছেন। রেল ও সড়ক পথে বেনাপোল স্থলবন্দর, সাতক্ষীরার স্থলবন্দর ব্যবহারে জনগণের আগ্রহ বেড়েছে।

পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংক চক্রান্ত করেছে। বাংলাদেশের এক শ্রেণির লোকও তাতে সায় দিয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশের মর্যাদা বাড়িয়েছেন, বিশ্ববাসী জেনেছে বাঙালিকে দাবায়ে রাখা যায় না।

পদ্মা সেতুর কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে। শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার জন্য সৃষ্টি হবে অনুকূল পরিবেশ। অনেকের কাছে ঢাকা বা আশপাশের চেয়ে খুলনা, বরিশাল অঞ্চলে শিল্প- কারখানা স্থাপন লাভজনক মনে হবে। চট্টগ্রাম নয়, এখন তাদের পছন্দের বন্দর মংলা বন্দর। বেনাপোল স্থল বন্দরের গুরুত্বও বেড়ে যাবে। সেতুর কারণে শিল্প হবে,সড়ক-হাসপাতাল-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-হাউসিং প্রকল্প গ্র্রহণে এগিয়ে আসবেন উদ্যোক্তারা। পর্যটন সুবিধার প্রসার ঘটবে

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA