• E-paper
  • English Version
  • শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন

×

রোহিঙ্গাদের দেশী-বিদেশী জঙ্গি সংগঠনে অন্তর্ভূক্ত করছে নিষিদ্ধ আনসার আল ইসলাম

  • প্রকাশিত সময় : বুধবার, ২ মার্চ, ২০২২
  • ১৪১ পড়েছেন

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের দেশী-বিদেশী জঙ্গি সংগঠনে অন্তর্ভূক্ত করছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম। গত দুই বছর ধরে কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলিতে জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত করার এ কার্যক্রম তারা চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য রোহিঙ্গাদের দলে টানতে তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও টেকনাফসহ বিভিন্ন ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে। একই সাথে সরাসরি প্রশিক্ষণের পাশাপাশি অনলাইন ও ‘এপস’ এর মাধ্যমে জঙ্গি কার্যক্রমের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে নিষিদ্ধ এ সংগঠনটি। র‌্যাব-৬ এর হাতে আটককৃত দুই শীর্ষস্থানীয় জঙ্গি নেতা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব কর্মকর্তারা।

বুধবার বিকাল ৩টায় র‌্যাব-৬ খুলনার সদর দপ্তরে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন পরিচালক লে. কর্ণেল মোহাম্মদ মোসতাক আহমেদ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা আরো জানান, বুধবার (০২ মার্চ) সকাল ৬টা ৫৫মিনিটের সময় র‌্যাব-৬ এর স্পেশাল কোম্পানির একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নড়াইল সদর থানার বেতবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় সেখানে গোপন বৈঠক কালে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর দুই শীর্ষ স্থানীয় জঙ্গি নেতা দাওয়াতি শাখার প্রধান খান মোহাম্মদ আবু নাইম ও সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ শাহারিয়ার রানা ওরফে সায়েমকে গ্রেফতার করে। ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমান উগ্রবাদী বই, নথিপত্র এবং সংগঠনের কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ ও কম্পিউটার উদ্ধার করা হয়।

এ কর্মকর্তা আরো জানান, খান মোহাম্মদ আবু নাইম ২০১৫ সালে জনৈক জুনায়েদ নামক ব্যক্তির দাওয়াতের মাধ্যমে আনসার আল ইসলামে যোগদান করেন। জুনায়েদ তাকে অনলাইন ভিত্তিক বিশেষ যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের আইডি ও পাসওয়ার্ড তৈরী করে দেন। পরে ২০১৭ সালে নাইম পড়াশোনার জন্য চীনে যায়। সেখান থেকে সে মালয়েশিয়াতেও যাতায়াত করতো।

পড়াশোনা চলাকালীন সময় অনলাইন ভিত্তিক বিশেষ যোগাযোগ মাধ্যমে জঙ্গি দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হয়। পরে সে ২০২০ সালে আনসার আল ইসলামের নেতা ওমরের মাধ্যমে শাহারিয়ার রানা (ওরফে সায়েম) কে দাওয়াত প্রদান করে সংগঠনের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করে। নাইম অনলাইনে শাহারিয়ারকে গোপনে যোগাযোগের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করে। অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে তারা নিজেদের মধ্যে এবং সংগঠনের অন্যান্য নেতা ও সদস্যদের সাথে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাত।

পরে শাহারিয়ার রানা সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে অর্থ সংগ্রহ ও লেনদেন বিষয়ক যাবতীয় বিষয় দেখাশোনা করতো। সে নিজ বাসাকে আনসার আল ইসলামের সদস্যদের জন্য আনসার হাউজ (সেইফ হাউজ) হিসেবে ব্যবহার শুরু করে।

পরবর্তীতে নাইম নিজে আরো বেশ কয়েকজনকে আনসার আল ইসলামের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করে নিয়মিত সরাসরি আনসার হাউজ (সেইফ হাউজ), গোপন স্থানে কিংবা অনলাইনে অন্যান্য সদস্যদের সাথে গোপন বৈঠক করে সংগঠনের কার্যক্রম চালাতে থাকে।

তিনি আরো জানান, প্রাথমিক বিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত দুই জঙ্গি নেতা র‌্যাবের কাছে রোহিঙ্গাদেরকে সংগঠনে অন্তর্ভূক্ত করার উদ্দেশ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন প্রকার ত্রাণ ও আর্থিক সহযোগিতা পাঠাতো বলে জানিয়েছে। এভাবে রোহিঙ্গাদের সহযোগীতার মাধ্যমে আনসার আল ইসলাম দেশী-বিদেশী বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সাথে রোহিঙ্গাদেরকে যুক্ত করছে। একই সাথে সংগঠনের পরিধি বাড়াতে প্রশিক্ষণ সহ গোপন তৎপরতা চালাচ্ছে। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে জঙ্গি সংগঠনগুলো তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে বলে আটক দুই জঙ্গি নেতা র‌্যাবের স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে নড়াইল সদর থানায় মামলা দায়ের করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে র‌্যাব।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA