জাতিসংঘের গবেষণা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ও বাপা’র সহ-সভাপতি ড. মো. নজরুল ইসলাম বলেছেন, মোংলা বন্দরের পশুর নদীর নাব্যতা রক্ষার জন্য অপরিকল্পিত জনস্বার্থ বিরোধী ড্রেজিং প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। একই সাথে এই ড্রেজিংয়ের ফলে পরিবেশ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া চলছে। অবিলম্বে পশুর নদীর অপরিকল্পিত ড্রেজিং বন্ধ করে পরিবেশ ও জনবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) আয়োজনে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পশুর নদী ড্রেজিংয়ের বালুর কবল থেকে বানীশান্তা ইউনিয়নের তিন ফসলি তিনশত একর কৃষি জমি রক্ষার দাবীতে খুলনার দাকোপ উপজেলার বানীশান্তা ইউনিয়নের বানীশান্তা-ভোজনখালী সংযোগ সড়ক মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার বিকেলে অনুষ্ঠিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বাপা’র জাতীয় পরিষদ সদস্য মোংলা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. নূর আলম শেখ। জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারন সম্পাদক শরীফ জামিল। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনার দাকোপ উপজেলা চেয়ারম্যান মুনসুর আলী খান। জনসভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বানীশান্তা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুদেব কুমার রায়। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন যুব বাপা’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দেওয়ান নূরতাজ আলম, বাণীশান্তা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিমল রপ্তান, সিপিবি খুলনা জেলার সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ রুহুল আমীন, কৃষক নেতা কিশোর রায়, বানীশান্তা ইউনিয়ন কৃষি জমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা সঞ্জীব দাস, বানীশান্তা ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন, সত্যজিৎ গাইন, বিশ্বজিৎ মন্ডল, সোহেল পাটোয়ারি, বিজন বিহারী মন্ডল, মোংলার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হুমায়ুন কবির, বিজন কুমার বৈদ্য, বাপা নেতা নাজমুল হক, কমলা সরকার, ইস্রাফিল, বয়াতি, রাসেল শেখ, হাসিব সরদার ও মিতালী বাওয়ালী।
সমাবেশের প্রধান বক্তা শরীফ জামিল বলেন, প্রান্তিক মানুষের জমি আর জীবিকা ধ্বংস করে উন্নয়নের নামে পশুর নদীতে চালানো আগ্রাসী খনন শুধু সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্রের উপরই আঘাত নয়, বরং দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে চরম মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন করে তুলেছে। স্থানীয় জনগনের সাথে কথা না বলে এ রকম অগ্রহণযোগ্য প্রকল্প সরকারের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিচালিত কর্মকান্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
সভাপতির বক্তৃতায় বাপা নেতা মো. নূর আলম শেখ বলেন, বানীশান্তা ইউনিয়নের তিন ফসলি কৃষি জমি ধ্বংস করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ড্রেজিংয়ের বালু ফেললে কৃষকেরা কর্মহীন হয়ে পড়বে। এছাড়া উচ্ছেদ ও পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে এবং কর্মহীন মানুষ সুন্দরবনের উপর অধিক মাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। যা টেকসই উন্নয়ন ধারণার পরিপন্থী। কৃষিজমি ধ্বংস করে ড্রেজিংয়ের বালু ফেলার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য তিনি মোংলা বন্দর ও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহবান জানান।