খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে সচিব ইকবাল হোসেনকে বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সমিতির খুলনা জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। বিষয়টি কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করলেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বলেও অভিযোগ করেছেন নেতৃবৃন্দ।
আজ বুধবার (২৩ মার্চ) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ এবং সেইসাথে দোষী চেয়ারম্যানের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করেন নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সভাপতি মোঃ জিয়ারত হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ পেশাগত দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় আমাদের সহকর্মী ইউপি সচিব মােঃ ইকবাল হােসেনকে সন্ত্রাসী কায়দায় বেধড়ক মারপিট করে মারাত্মক জখম করেছেন। এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জ্ঞাপনের পাশাপাশি অবিলম্বে হামলাকারীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা খুলনা জেলা বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব পদে থেকে সরকারের বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তৃণমূল জনগােষ্ঠিকে সরকারি সেবা প্রদান করে থাকি। অনেক সময় দুপুরের খাবার রাতে বাসায় যেয়ে খেতে হয়। এরপরে অফিসের কাজ বাসায় এনে রাতেও করতে হয়। কারণ ইউনিয়ন পরিষদসমুহে প্রয়ােজনীয় জনবল নেই। এভাবে আমরা প্রতিনিয়ত মানুষের সেবায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করছি।
তিনি জানান, আমাদের সহকর্মী মােঃ ইকবাল হােসেন গত ২১ মার্চ নিয়মিত অফিসের কাজ সমাপ্ত করে বিকাল ৫টার পরে তিনি অফিস থেকে বাড়ীতে ফিরে যান। এরপরে চেয়ারম্যান সাহেব লােক পাঠিয়ে তাকে বাড়ী থেকে ইউনিয়ন পরিষদে ধরে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করেন এবং নানান হুমকি দেন। মােবাইল কেড়ে নিয়ে যােগাযাগ বন্ধ করে দেন। এতে তার হাতে বাম হাত ভেঙ্গে যায় এবং ডান হাত ফ্রাকচার হয়েছে। গায়ে মারপিটের চিহ্ন আছে এবং মাথা গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা জানার পর আমাদী ইউনিয়নের কর্মরত ইউপি সচিব কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহােদয়কে অবহিত করলেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এ অবস্থায় আমরা খুলনা জেলার ইউপি সচিব কর্মস্থলে ভীতের মধ্যে আছি।
এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনে নিরাপত্তার স্বার্থে মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারপূর্বক উল্লেখিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির জোর দাবি জানান তারা।
গতকাল মঙ্গলবার (২২ মার্চ) এ ঘটনার প্রতিবাদে ও হামলাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছিল তারা।
উল্লেখ্য, গত ২১ মার্চ সন্ধ্যায় খুলনার কয়রা উপজেলার ৪নং মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে সচিব মো. ইকবাল হোসেনকে নিজ কার্যালয়ে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠে। তবে চেয়ারম্যান মারপিটের বিষয়টি অস্বীকার করেন।