রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
খুলনা ডিএনসির অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার খুলনার সবজির বাজারে দামে স্বস্তি;কমেছে গোশ ও মাছের দাম  নির্বাচনের ট্রেন চলছে, কেউ থামাতে পারবে না : ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনা আমাকে এমপি না, জনতার সেবা করতে পাঠিয়েছেন : এস এম কামাল হোসেন ডলারের দাম আরও কমলো খুলনায় কয়লা ও গ্যাসসহ জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিশ্বব্যাপী নিরাপদ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিকী প্রদর্শন খুলনা—১ আসন: জনগণের জন্য কাজ করতে চান সাবেক এমপি ননী গোপাল নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আহসান হাবিব খান (অব:) এর খুলনা সফরসূচি বিএনপি নেতার ভাইয়ের ইন্তেকালে শোক মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে নোবেল

খুলনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের স্ক্যানার মেশিন অকেজো, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা

মোঃ শহীদুল হাসান :
  • প্রকাশিত সময় : বুধবার, ২৫ মে, ২০২২
  • ৩২৩ পড়েছেন

অনেকদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনা শাখার প্রবেশদ্বারের ব্যাগ স্ক্যানার মেশিনটি। এতে হুমকিতে পড়েছে ব্যাংকটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তবে কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে নেই কোন মাথাব্যাথা। গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানটিতে ঘটতে পারে যে কোন ধরণের দূর্ঘটনা এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। ব্যাংকের গ্রাহকদের মনে তৈরি হয়েছে অজানা আশংকা। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না প্রতিষ্ঠানটির অফিস প্রধান।  

দেশের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক। গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানটির নিছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দেশের এবং দেশের মানুষের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ও মুল্যবান সম্পদ এ ব্যাংকে গচ্ছিত থাকে। খুলনায় ব্যাংকটির শাখার প্রবেশ পথে বসানো আছে একটি ব্যাগ স্ক্যানার মেশিন। অনেকদিন ধরে মেশিনটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। মেরামত করার বিষয়ে তেমন কোন পদক্ষেপ নেই কর্তৃপক্ষের। কোন এক অদৃশ্য কারণে এ বিষয়ে মুখ খুলছে না ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কেউই। ভীতির মধ্যে রয়েছে ব্যাংকের গ্রাহকরা। কারণ তাদের অনেকের মূল্যবান সম্পদ ও দলিলপত্র এ ব্যাংকে গচ্ছিত থাকে। ব্যাংকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা বলছে তাদের অপারগতার কথা।

ব্যাকের সেবা নিতে আসা গ্রাহক ব্যবসায়ী আনিছুর রহমান জানান, অনেকদিন যাবত দেখছি মেশিনটি নষ্ট। এভাবে একটি আর্থিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের স্ক্যানার মেশিন এত দিন ধরে অকেজো থাকবে এটা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ছাড়া কিছুই না।

প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা জানান, স্ক্যানার মেশিনটি অকেজো হওয়ার কারণে আমরা মেটাল ডিটেক্টর দিয়েই কোন রকম কাজ চালিয়ে নিচ্ছি।

এতে কি প্রতিষ্ঠানটির নিছিদ্র নিরাপত্তা রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে জানতে চাইলে তারা জানান, “কর্তৃপক্ষ মেরামত না করলে আমাদের তো কিছুই করার নেই। আমাদের যেভাবে বলে আমরা সেভাবে কাজ করি।”

তবে এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজি নন ব্যাংকটির কোন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, “অনেকদিন ধরে অকেজো হয়ে আছে স্ক্যানার মেশিনটি। তবে এটি মেরামতের জন্য অনেকবার হেড অফিসে পত্র লেখা হয়েছে শুনেছি। তারপরও এটি মেরামত করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোন ধরণের পদক্ষেপ দেখছি না।

ব্যাংকটির খুলনা শাখার প্রধান নির্বাহী পরিচালক এস এম হাসান রেজার সাথে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য গেলে নিরাপত্তা রক্ষীরা প্রতিবেদকের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ব্যাংকের সংস্থাপন শাখায় যোগাযোগ করতে বলেন।

প্রতিবেদক সংস্থাপন শাখার উপ-পরিচালক নেওয়াজ শরীফের সঙ্গে দেখা করলে তিনি জানান আমি এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারবো না। তবে আপনি একটি লিখিত আবেদন করে যান তাহলে আপনাকে আমরা তথ্য জানাবো।

প্রতিবেদক তার কাছে প্রতিষ্ঠানের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তার নাম জানতে চাইলে তিনি জানান, আমাদের অফিসে কোন তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা নেই। তবে আমাদের একজন কর্মকর্তা আছেন যিনি আমাদের ব্যাংকের অভ্যন্তরীন তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা। তিনি ব্যাংকের বাহিরের কাউকে তথ্য দেননা।

প্রতিবেদক এ বিষয়ে তাহলে কে তথ্য দিবে জানতে চাইলে উপ-পরিচালক নেওয়াজ শরীফ বলেন, আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আপনাকে এ বিষয়ে জানাচ্ছি।

পরে তিনি প্রতিবেদককে ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক মো. মতিয়ার রহমান মোল্লার মুঠোফোন নম্বর এবং ইমেইল আইডি দিয়ে বলেন, মতিয়ার রহমান স্যারের সাথে যোগাযোগ করেন অথবা তার নিকট তথ্য চেয়ে লিখিত আবেদন করেন তিনি আপনাকে এ বিষয়ে তথ্য দিবেন।

ব্যাংকটির উপমহাব্যবস্থাপক মো. মতিয়ার রহমানের কাছে মুঠোফোনে ল্যাগেজ স্ক্যানার মেশিনটির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, “আমাদের অন্য একটি ডিপার্টমেন্ট মেশিনটি রক্ষণাবেক্ষণ করে। মেশিনটি ঠিক করার জন্য টেন্ডার হয়েছে বলে আমি জানি।”

তবে কোন মাসে টেন্ডার হয়েছে এবং কবে কাজ শুরু হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, “ আমাদের এসব কাজের বিষয়গুলো হেড অফিসের মাধ্যমে করতে হয় তাই দেরি হয়ে যায়। তবে টেন্ডার কবে হয়েছে এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তবে আপনারা লিখিতভাবে আবেদন করলে আমরা জানাতে পারবো।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে তথ্য কর্মকর্তার কোন সাইনবোর্ড বা অফিস নেই কেন? এবং এতে তথ্য অধিকার আইনের লঙ্ঘন হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা নিচে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিবো। আমাদের নিচে বিল্ডিং মেরামতের কাজ চলছে, কাজ শেষ হলে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিবো।”

বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনা শাখার ওয়েব সাইটটি আপডেট নাই কেন এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তর না দিয়ে বলেন, “আপনি তথ্য অধিকার আইনে লিখিতভাবে তথ্য চাইলে আপনাকে জানানো হবে।”

পরবর্তীতে ব্যাংকটির নির্বাহী পরিচালক এস এম হাসান রেজার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক খুলনার সংশ্লিষ্ট শাখা রয়েছে আপনি সেখানে যোগাযোগ করেন। আমি এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারবো না।”

এ বিষয়ে খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক। এটার নিরাপত্তার বিষয়ে কোন অপোষ করা যায় না। এর সেখানে নিরাপত্তা জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যাগ স্ক্যানার মেশিনটি অনেকদিন যাবত অকেজো হয়ে আছে। মেশিনটি মেরামতে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে আমি মনে করি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এধরনের আরো সংবাদ

Categories

© All rights reserved © 2019 LatestNews
Hwowlljksf788wf-Iu