• E-paper
  • English Version
  • শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:৫৮ পূর্বাহ্ন

×

সামগ্রিকভাবে দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রাখবে পদ্মা সেতু -এ্যাড. মো. সাইফুল ইসলাম  

  • প্রকাশিত সময় : রবিবার, ৫ জুন, ২০২২
  • ২০৮ পড়েছেন

পদ্মা সেতুকে ঘিরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যে ধরনের শিল্প কারখানা, সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটনসহ বিনোদন কেন্দ্র, আবাসন, আত্মকর্মসংস্থান ও শিক্ষা-সংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন শুরু হয়েছে তাতে আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান অনেকখানি বৃদ্ধি পাবে। একই সাথে শিক্ষা-সংস্কৃতির বিকশিত বলয় সৃষ্টি হবে। যার ফলে আমাদের সমাজ সংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উন্নয়নের পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে। বস্তুত সামগ্রিকভাবে দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে ও শিল্প সংস্কৃতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে পদ্মা সেতু বলে মন্তব্য করেছেন খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাড. মো. সাইফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের একটি শ্রেষ্ঠ অর্জন। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যখনই পদ্মা সেতুর কার্যক্রম শুরু করেন তখনই শুরু হয় ষড়যন্ত্র। বিএনপি-জামাতের ষড়যন্ত্রের পাশাপাশি ডঃ ইউনুসের সরাসরি হস্তক্ষেপ বিশ্বব্যাংককে প্রভাবিত করে পদ্মা সেতুর কার্যক্রমকে থামিয়ে দেয়। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যাচার ও দোষারোপ করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব ব্যাংককে সুষ্ঠ তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেয়ার অনুরোধ করলেও তারা সিদ্ধান্তে অটল থাকে। তারা সরকারকে একটি দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার হিসেবে আখ্যা দিয়ে পদ্মা সেতুর কার্যক্রমে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। তারপরেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু কন্যা হিসেবে সাহসিকতা ও দেশপ্রেমে অটল থেকে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কার্যক্রম শুরু করে।

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন ছাড়া নিজস্ব অর্থায়নে এত বড় প্রকল্প বাংলাদেশের মতো দেশ করতে পারবে সে বিষয়ে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীর অনেকেই শঙ্কিত ছিলো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করতে পারেন তা তিনি প্রমাণ করেছেন। আগামী ২৫ জুন আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জন মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুর দ্বার উন্মোচন হবে। এতে শুধু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনীতির উন্নয়ন নয় সামগ্রিক বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধি পাবে দেড় থেকে দুই শতাংশ। সেই সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বেকার সমস্যার সমাধান দারিদ্র্যের বিমোচনসহ ব্যাপক পরিবর্তন হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। বাংলাদেশের রপ্তানি প্রধান দ্বার চট্টগ্রাম বন্দর সেখান থেকে ৯০ শতাংশ পণ্য রপ্তানি করা হয় আর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মোংলা বন্দর দিয়ে ১০ শতাংশ পণ্য রপ্তানি করা হয়। পদ্মা সেতু চালু হলে মোংলা বন্দর দিয়ে আরো বেশি পণ্য রপ্তানি হবে এবং রপ্তানির গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। আমদানির ক্ষেত্রে ও চট্টগ্রাম বন্দরের যে জোয়ার পদ্মা সেতু চালু হলে মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানির ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।

বিদেশী বিনিয়গকারীরা পণ্য রফতানি ও খালাসে কোন বন্দরকে সহজভাবে এবং কম সময়ে ও কম খরচে ব্যবহার করা যায় বিবেচনা করবে। কারণ পদ্মা সেতুর মাধ্যমে ঢাকা থেকে যেকোনো পণ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে মোংলা বন্দরে পৌঁছে যাবে। বিনিয়গকারীরা দ্রুত কার্যক্রম সম্পন্ন করে ঢাকায় ফিরে যেতে পারবে। যার ফলে আমাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম গতিশীল হবে। আমরা দেখতে পাই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পদ্মা সেতুকে ঘিরে যে ধরনের শিল্প কারখানা স্থাপন শুরু হয়েছে তাতে আমাদের শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান অনেকখানি বৃদ্ধি পাবে। আমাদের দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে। সামগ্রীকভাবে দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রাখবে পদ্মা সেতু। সেই কারণে পদ্মাসেতু শুধু গুরুত্বপূর্ণই নয়, পদ্মা সেতু দেশের জন্য একটি মাইলফলক। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে যে আগামী উন্নত দেশের দিকে নিয়ে যাচ্ছে সেখানে পদ্মা সেতু আমাদেরকে আরো অনেকখানি এগিয়ে নিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী লাল সবুজের বাংলাদেশকে মাথা উচু করে দাড় করিয়েছে সারা বিশ্বে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বাংলাদেশে আরো এগিয়ে যাবে বহু দূর।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পদ্মার এপার তথা দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষকে মায়ের মমতা, বোনের স্নেহে আগলে রেখেছেন। এজন্য তিনি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের উন্নয়ন এবং ভাগ্যের পরিবর্তনে আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করছেন। তিনি এ অঞ্চলের মানুষের জন্য উপহার দিয়েছেন পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতুকে ঘিরেই আমাদের এ অঞ্চলের মানুষের অনেক বড় স্বপ্ন। এই পদ্মা সেতু ঘিরেই আমাদের আগামীর সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ, লাল সবুজের বাংলাদেশ। নতুন প্রজন্মের কর্ম চঞ্চলতার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে এগিয়ে যাবে এ অঞ্চলের আবাসন ব্যবস্থা। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়ে গেলেই আমাদের বিমান বন্দরের কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে। বিদেশি পর্যটকরা সুন্দরবন কেন্দ্রিক বিপুল সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পের প্রতি আরো আগ্রহী হবে উঠবে। সেই সাথে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা অধিক সংখ্যায় এ অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে উঠবে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলে বহুমুখী উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় খুলনায় শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ আরো কিছু উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী দিনে খুলনাকে ঘিরে অর্থনীতি যেভাবে সমৃদ্ধিশালী হচ্ছে এতে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ফলে পদ্মা সেতুর যোগাযোগ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও উপকূলীয় এলাকায় উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশ যে অবস্থান রয়েছে তা আরো এগিয়ে যাবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA