• E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন

×

পদ্মা সেতু নতুন বার্তা পৌঁছে দেবে বিশ্ব পরিমন্ডলে : প্রফেসর ড. বজলার রহমান

  • প্রকাশিত সময় : শনিবার, ১১ জুন, ২০২২
  • ১৭২ পড়েছেন

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংযোগের প্রধানতম মাধ্যম যোগাযোগ ব্যবস্থা। বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশ পথের পাশাপাশি ডিজিটাল যোগাযোগ মাধ্যম বিশ্বকে গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত করেছে। এর ফলে জাতিগত, শিক্ষা-সংস্কৃতি, ব্যবসা বানিজ্য ও আত্মিক যোগাযোগ মানুষের হাতের মুঠোই চলে এসেছে। আমাদের দেশও এ যোগাযোগ ব্যবস্থায় পিছিয়ে নেই। পদ্মা সেতু চালু হলে দেশীয় আন্তঃযোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হবে। ফলে দূরত্ব কমে যাবে দেশের এক অঞ্চলের সঙ্গে অন্য অঞ্চলের। অর্থনীতির চাকার গতিশীলতা বৃদ্ধির সাথেসাথে আঞ্চলিক বৈষম্য অনেকাংশে নিরসন হবে। দ্রুত গতিতে অর্থনীতির ভীত শক্তিশালী করতে যেমন ভূমিকা রাখবে তেমনি দেশের মানুষের জীবন যাত্রার মান বাড়বে। উন্নয়নের মাইল ফলক পদ্মা সেতু সকল ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি অর্জনের সহায়ক হিসেবে দেশে যেমন বিবেচিত হবে তেমনি পদ্মা সেতু নতুন বার্তা পৌঁছে দেবে বিশ্ব পরিমন্ডলে বলে মন্তব্য করেছেন খুলনা নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. বজলার রহমান।

তিনি বলেন, দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের একুশটি জেলার জনগণের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ও দাবি ছিল পদ্মা সেতু। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাও বঙ্গবন্ধুর মতো একজন ভিশনারি লিডার। তিনি পদ্মা নদীর ওপর সেতুর শুধু স্বপ্নই দেখেননি তার বাস্তব দেখতে চেয়েছিলেন। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে তিনি পদ্মা সেতুর ওপর সেতু নির্মাণের কাজ হাতে নেন। দেশের সর্ব বৃহৎ মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতু যা বর্তমান সরকারের সময়ে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে আল্লাহ পাক সম্পন্ন করার তৌফিক দান করেছেন। আগামী ২৫ শে জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন। পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। অর্থনীতির ভিত শক্তিশালী করতে ভূমিকা রাখবে দেশের দুই ভাগকে এক করা পদ্মা সেতু।

তিনি বলেন, সেতু চালু হলে দেশের সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। ঢাকা থেকে মাওয়া-ভাঙ্গা-যশোর-খুলনা রেল সংযোগ স্থাপন হবে। একইসাথে ঢাকা থেকে খুলনা, মংলা, বরিশাল, কুয়াকাটা অর্থনৈতিক করিডোর হিসেবে গড়ে উঠবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চল ট্রান্স-এশিয়ান হাইওয়ে এবং ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে। ভারত, ভুটান ও নেপালের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন এবং যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের সুবিধা তৈরি হবে। পদ্মার যোগাযোগ সুবিধা নিয়ে নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্ক স্থাপনে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট এবং দেশের শিল্পায়ন ত্বরান্বিত হবে। সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পের ব্যাপক উন্নতি হবে। এছাড়া মাওয়া ও জাজিরায় গড়ে উঠবে নতুন রিসোর্ট ও হোটেল, শপিংমল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। যার ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ দেশে বিপুল পরিমান কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

তিনি বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু শুধু যোগাযোগ নেটওয়ার্ক-এ বিপ্লব ঘটাবে না। এ সেতু সতেরো কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। পদ্মা সেতুর ফলে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে, দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ দুই থেকে চারঘণ্টা কমে যাবে। রাজধানীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবসায়-বাণিজ্যের প্রসার, কাঁচামাল সরবরাহ এবং শিল্পায়ন সহজতর করতে সহায়তা করবে। এ জেলাগুলোতে গড়ে উঠবে ছোট বড় শিল্প। এতদাঞ্চলের কৃষির ব্যাপক উন্নতি সাধিত হবে। এ অঞ্চলের কৃষকরা তাদের কৃষি পণ্যে অল্প সময়ের মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিতে পারবে। ফলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ভালো মূল্য পাবে। যার ফলে উৎপাদন বাড়বে।

তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে মোংলা ও পায়রা বন্দরের কার্যকারীতা আরো বৃদ্ধি পাবে। ফলে বাংলাদেশ সমুদ্রপথে বাণিজ্য করা দেশগুলোর সঙ্গে অধিক ব্যাবসায়ীক ক্ষেত্র তৈরি হবে। বন্দরকেন্দ্রিক শিল্প ও বাণিজ্য কেন্দ্র তৈরি হবে। অর্থনীতিক অঞ্চল গড়ে উঠবে। দেশের জিডিপি ১.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। পদ্মা সেতু এশিয়ান হাইওয়ে এবং ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত থেকে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর একটি দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড আবর্তিত হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে কৃষিপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল এবং শিল্পজাত পণ্য সহজে ও স্বল্পব্যয়ে স্থানান্তর করা যায়। এর ফলে দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, শিল্প ও ব্যবসার প্রসার ঘটে। এজন্য যে কোন দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পদ্মা সেতু এক্ষেত্রে অর্থনীতির ভিত্তি ও সোনালি সোপান হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করেন এ শিক্ষাবিদ।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA