প্রমত্তা পদ্মার বুকে নির্মিত সেতু বিশ্বদরবারে অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন খুলনা সম্মিলিত নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ। শুক্রবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সম্মিলিত নাগরিক সমাজ খুলনার আহ্বায়ক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট মোঃ সাইফুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও তার আন্তরিক সদিচ্ছায় বাংলাদেশের অর্থনীতির পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে। পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের সকল প্রকার অপপ্রচার ও অপবাদকে নস্যাৎ করে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের সময়ে আরো অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। আগামীকাল ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের অনন্য মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার যমুনা সেতু উদ্বোধনের পর ১৯৯৮ সালে পদ্মা সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই করে। ২০১১ সালে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বিশ্ব ব্যাংক, জাইকা, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক ও ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের সাথে চুক্তি করে। কিন্তু দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের অপপ্রচারে উন্নয়ন সংস্থা গুলো দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ায়। পরবর্তীতে জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। নির্মাণ কাজের দায়িত্ব দেয়া হয় চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশনকে। ২০১৮ সালে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কয়েক দফায় পদ্মা সেতুর নকশা পরিবর্তন, রেল সংযোজন, গ্যাস-বিদ্যুৎ অপটিক্যাল ফাইবার লাইন সংযোজন, নদীশাসন ইত্যাদি কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্মাণ ব্যয় ও নির্মাণ সময় বৃদ্ধি পায়। পরিশেষে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২১ সালের জুন মাস নির্ধারণ করা হলেও মহামারী করোনার কারণে কাজের কিছুটা মন্থর হওয়ায় কাজ শেষ করতে আরো সময় প্রয়োজন হয়। পরিশেষে ৩০,১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ শেষ হয়।
তিনি আরো বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বহু আকাঙ্খিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে দেশের জিডিপি বাড়বে, দারিদ্র বিমোচন হবে। মোংলা ও পায়রা বন্দরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন হবে। এ অঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষের ভাগ্য বদলে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে পদ্মা সেতু। এ সেতুকে ঘিরে সোনালি ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছেন এ অঞ্চলের মানুষ। পদ্মা সেতু চালু হলে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সাথে এ অঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হবে। পিছিয়ে পড়া ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আরও মনোযোগ বাড়বে। এসব জেলায় নতুন নতুন শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। বাংলাদেশ যুক্ত হতে পারবে এশিয়ান হাইওয়েতে। ফলে এ অঞ্চলের অর্থনীতির চাকা ঘোরার পাশাপাশি বাড়বে কর্মসংস্থান। গার্মেন্টস, চিংড়ি ও পাটসহ নানা ধরনের শিল্প কারখানার পণ্য মংলা বন্দর দিয়ে রপ্তানি হবে। মংলা বন্দরে আমদানি পণ্যবাহী জাহাজের সংখ্যা পূর্বের তুলনায় বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। সর্বোপরি পদ্মা সেতুতে অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।
দেশের মানুষকে পদ্মা সেতু উপহার দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান সম্মিলিত নাগরিক সমাজ খুলনার নেতৃবৃন্দ।
এসময়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তারিক মাহমুদ তারা, এডভোকেট এনামুল হক, এডভোকেট সাজ্জাদ আলী, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম নজরুল ইসলাম, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক আহমেদ, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এসএম জাহিদ হোসেনসহ সম্মিলিত নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত নাগরিক সমাজ খুলনার নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
উপদেষ্টা সম্পাদক: আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক,মেয়র, খুলনা সিটি কর্পোরেশন। সম্পাদক: মো: মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ। আইটি ইনচার্জ : মোঃ নাঈমুজ্জামান শরীফ । প্রকাশনা, বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ: "জাহান মঞ্জিল" ৪০, সিমেট্টি রোড (বেণী বাবু রোড), ফুলমার্কেট, খুলনা। dailydeshsanjog@gmail.com, sohagkhulna@gmail.com, online.deshsanjog.news@gmail.com যোগাযোগ করুন: info@deshsanjog.com</p>
দৈনিক দেশ সংযোগ