• E-paper
  • English Version
  • শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন

×

খুলনা নগরীতে নকশা বহির্ভূত ভবন ভেঙে দিল কেডিএ

  • প্রকাশিত সময় : সোমবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২২
  • ৯৯ পড়েছেন

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)-এর অনুমোদিত নকশা বহির্ভূত ভবন নির্মাণ করায় কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার নগরীর গল্লামারী এলাকায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে মো. খলিল হাওলাদারের তিন তলা ভবনে অভিযান চালিয়ে নকশা বহির্ভূত অংশ ভেঙে দেয় কেডিএ। একই সাথে অন্যের জমিতে নির্মিত ভবনের অংশ গুড়িয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে ভবনের মালিক আদালতে মামলা রয়েছে তারপরও কেডিএ অন্যায়ভাবে ভবনটি ভেঙে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এদিকে নিয়ম বহির্ভূত ভবন ভেঙে ফেলায় কেডিএ’র এ অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী ও নাগরিক নেতারা। আধুনিক বাসযোগ্য খুলনা নগরী গড়তে কেডিএকে আরো দায়িত্বশীলতার সাথে ভবন নির্মান মনিটরিং করার দাবিও জানিয়েছেন তারা।

কেডিএ’র কর্মকর্তারা জানান, লবণচরা থানার কৃষ্ণনগর মৌজার বাসিন্দা খলিল হাওলাদার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটি ভবন নির্মাণের জন্য নকশা অনুমোদন দেন। কিন্তু তিনি পাশের একজনের জমির কিছু অংশ দখল করে ভবন নির্মাণ করেন। বিভিন্ন সময় তাকে নোটিশ দিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ এবং বর্ধিত অংশ ভেঙ্গে ফেলার নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি শোনেননি। এমনকি কেডিএর কর্মচারীরা ভবনের মালিককে নোটিশ দিতে গেলে তিনি তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও জীবন নাশের হুমকিও প্রদান করেছেন। পরে অভিযান চালিয়ে ওই ভবনের বর্ধিতাংশ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। অভিযান পরিচালনাকালে ভবনটির মালিক খলিল হাওলাদার বাধা দিলে তাকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

অভিযান পরিচালনাকালে কেডিএর স্থায়ী সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) শবনম সাবা, স্থায়ী সদস্য (উন্নয়ন) জামাল উদ্দিন, অথরাইজড অফিসার জি এম মাসুদুর রহমান, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি অধিগ্রহণ শাখা) মো. আল আামিন উপস্থিত ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী জানান, খলিল হাওলাদার অন্যের জমি দখল করে এ ভবন নির্মান করেছে। কেডিএ’র এ অভিযানকে আমরা সাধুবাদ জানাই। খুলনা নগরীতে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকলে অনুমোদিত নকশা বহির্ভূতভাবে কেউ ভবন নির্মান করতে পারবে না। ভবনের মালিক মো. খলিল হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, আদালতে মামলা রয়েছে তারপরও কেডিএ অন্যায়ভাবে আমাদের ভবনটি ভেঙে ফেলেছে। তবে ভবন ভাঙার বিষয়ে আদালতের কোন নিষেধাজ্ঞা নেই বলে জানান তিনি।

সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি অধিগ্রহণ শাখা) মো. আল আামিন বলেন, আমরা কেডিএর অনুরোধে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় এ অভিযানে এসেছি। অভিযান পরিচালনা কালে আইন শৃঙ্খলার কোন ধরণের অবনতি না হয় আমরা সে দিকটা খেয়াল রাখছি।

কেডিএ’র স্থায়ী সদস্য (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) শবনম সাবা বলেন, খলিল হাওলাদার কৃষ্ণনগর মৌজার ৭৩১ নং দাগে ভবন নির্মানের জন্য নকশার অনুমোদন নেন। কিন্তু তিনি ঐ দাগে ভবন নির্মাণ না করে অন্য দাগে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ভবন নির্মাণ করেন। আমরা বিভিন্ন সময় তাকে ভবন নির্মাণ বন্ধ ও বর্ধিত অংশ ভেঙে ফেলার নোটিশ প্রদান করি। তিনি কেডিএর কাজকে বাধাগ্রস্থ করতে আদালতে মামলা করে। আদালত তদন্তে অন্য দাগে ভবন নির্মাণ করায় খলিল হাওলাদারের আবেদন খারিজ করে দেন। আমরা চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়ার পরে আজ এ অভিযান পরিচালনা করছি। আমরা আইনগত সব পন্থা অনুসরণ করেই এ অভিযান চালিয়েছি।

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এ অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়ে নাগরিক নেতা এ্যাড. বাবুল হাওলাদার বলেন, খুলনায় যারা কেডিএ’র অনুমোদিত নকশার বাইরে ভবন নির্মান করছে তাদের বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযান আরো পরিচালনা করা উচিত। সেই সাথে নকশা অনুমোদন দেওয়ার পর কেডিএ’র উচিত আরো বেশি মনিটরিং করা। কেডিএর সঠিক মনিটরিংয়ের অভাবে অসাধু ভবন মালিকরা নকশা বহির্ভূত ভবন নির্মান করছে। ভবন নির্মাণের পর কেডিএ অভিযান চালিয়ে ভবনের অবৈধ অংশটি ভাঙছে। এক্ষেত্রে তাদের জনবল বৃদ্ধি করে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে সঠিকভাবে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে এ কাজগুলো করতে হবে। খুলনায় নকশা বহির্ভূতভাবে ভবন মালিকরা ভবন নির্মান করে আধুনিক ও বাসযোগ্য খুলনার স্বপ্নকে নস্যাৎ করে দিচ্ছে। এ সমস্য থেকে উত্তরণে কেডিএকে আরো বেশি দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করতে হবে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA