শনিবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৫:৩৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
খুলনার সবজির বাজারে দামে স্বস্তি;কমেছে গোশ ও মাছের দাম  নির্বাচনের ট্রেন চলছে, কেউ থামাতে পারবে না : ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনা আমাকে এমপি না, জনতার সেবা করতে পাঠিয়েছেন : এস এম কামাল হোসেন ডলারের দাম আরও কমলো খুলনায় কয়লা ও গ্যাসসহ জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিশ্বব্যাপী নিরাপদ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিকী প্রদর্শন খুলনা—১ আসন: জনগণের জন্য কাজ করতে চান সাবেক এমপি ননী গোপাল নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আহসান হাবিব খান (অব:) এর খুলনা সফরসূচি বিএনপি নেতার ভাইয়ের ইন্তেকালে শোক মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে নোবেল গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নড়াইলের নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

জিয়াউর রহমান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিল না, ছিল অনুপ্রবেশকারী পাকিস্তানি চর : বিচারপতি শামছুদ্দিন মানিক

মো. শহীদুল হাসান :
  • প্রকাশিত সময় : বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ১০১ পড়েছেন

সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শামছুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছেন, জিয়াউর রহমান কখনও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। সে প্রকৃত পক্ষে একজন রাজাকার ছিল। সে মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রবেশকারী পাকিস্থানী চর ছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের সকল গোপনীয় অপারেশন ও তথ্য সে পাকিস্থানীদের কাছে পাচার করতো। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনা প্রচারিত হওয়ার পর জিয়া পাকিস্থানী স্বার্থ রক্ষায় পাকি জাহাজ সোয়াটে মালামাল খালাস করতে যায়। যে কথা কর্নেল অলি আহম্মেদ নিজেই তার লেখায় বলেছেন। পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে হত্যা করেছে জিয়া। জিয়ার সকল কর্মকান্ড দেশে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের পূর্নবাসন ও জামায়াতীদেরকে রাজনীতির সুযোগ করে দিয়ে সেটাই প্রমান করেছে।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) খুলনায় মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ : রাজনীতি, উন্নয়ন ও আগামীর ভাবনা শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, দেশে বহু অপঘটনার জন্ম দিয়েছে জিয়া। দেশের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করেছে জিয়াউর রহমান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা মামলার এভিডেন্স থেকে দেখা গেছে জিয়াই ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় মূল চাবিকাঠি নাড়ানোর মূল নায়ক। এ হত্যাকান্ডের পিছনে কারা ছিল তাদের মুখোশ খুলতে বিশেষ তদন্ত কমিশন করার দাবী জানিয়েছি। আইনমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন কমিশন করা হবে। এখন আমরা তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে ঘাতকদের মুখোশ খুলে দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছি। বিচারপতি শামছুদ্দিন মানিক বলেন, জিয়া গং ১৯৭৫ সালের পর স্বাধীনতা বিরোধী গোলাম আজমকে পাকিস্তান থেকে দেশেই শুধুই আনেনি। বরং গোলাম আজম গংসহ মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদেরকে দেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়। এদেশে খুনী জিয়া ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক ও দূর্নীতির রাজনীতি শুরু করেছিল। এছাড়া ছাত্র, যুব ও জাতীয় রাজনীতিতে যে অস্ত্রের ঝনঝনানি সেটিও জিয়া শুরু করেন মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে। প্রধান আলোচক বলেন, জিয়াউর রহমান গংরা যেটা শুরু করেছিল শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ বিজয়ী না হলে দেশকে পাকিস্থান বানিয়ে ফেলতো। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী রাজাকার জামাত-বিএনপি আবার ক্ষমতায় সেটা ভাবাও যায় না। মোল্লারা মসজিদ থেকে লাঠিসোটা নিয়ে মিছিল করে মনে করে থাকে তারা অনেক শক্তিশালী। কিন্তু এ দেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামলে মৌলবাদী-রাজাকাররা বঙ্গপোসাগরে ভেসে যাবে। কাজেই শেখ হাসিনা সরকারের কিছু দোষত্রুটি ও ভুল থাকলেও রাজাকার মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী জামাত-বিএনপি ও তাদের সহযোগীদের ক্ষমতার পথ বন্ধ করতে আগামীতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে আবারও ক্ষমতায় আনতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সাধারন মানুষকে একত্রিত করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও এইম বাংলার যৌথ আয়োজনে খুলনা প্রেস ক্লাবের শহীদ শেখ আবু নাসের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনার সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতি হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি। যারা দেশের উন্নয়ণ ও অসাম্প্রদায়িক দেশ চান তাদের সবাইকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উর্ধ্বে তুলে ধরে কাজ করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে নিয়ে আবারও স্বাধীনতা বিরোধী ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এক হচ্ছে। তাদেরকে রুখে দাড়াতে মুক্তমনা, অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তিকে এক হয়ে আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করতে হবে।

খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো: ফারুক আহমদের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ও তার দলবল দেমের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার মূল চেতনাকে ধ্বংস করেছে। দেশকে পিছনের দিকে নিয়ে গেছে। তারা বাংলাদেশকে আরেকটি পাকিস্তান ও আফগানিস্থান বানাতে চায়। জিয়া ক্ষমতায় গিয়ে সামরিক আদেশ দ্বারা পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা তুলে দিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পূনর্বাসন করেছেন। ১৯৭২ সালের সংবিধানের ১২ ও ৪৮ অনুচ্ছেদে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু জিয়া ৪২টি স্থানে সামরিক আদেশ দ্বারা সংশোধনী করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, চেতনা ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে বাদ দিয়েছেন। যার মাধ্যমে পাকিস্তানের স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে ২৩ বছরের আন্দোলন সংগ্রামকে অস্বীকার করে দূর্বৃত্তায়ন ও জঙ্গিবাদের উত্থানের পক্ষে জিয়াই কাজ করেছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের রাজনীতির সাথে যারা আছেন তাদের উপলব্ধি হবে এবং মুক্তিযুদ্ধের রাজনীতির সাথে একদিন সম্পৃক্ত হবেন বলে প্রত্যাশা করেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা জন্যই বাংলাদেশের বর্তমানে উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। দেশে শেখ হাসিনার বিকল্প কোন নেতৃত্ব নেই। সরকারের কিছু সমস্যা, দূর্বলতা থাকতে পারে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ও রাজাকারদের হাতে দেশকে তুলে দিয়ে আরেকটি আফগানিস্থান বা পাকিস্তান আমরা বানাতে চায় না। দেশে এখন পরগাছা ও দালাল রাজনীতিতে ভরে গেছে। এইসব পরগাছা রাজনীতি ও দালালদেরকে দেশের রাজনীতি থেকে চিরতরে বিতাড়িত করেই মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে আহবান জানান তিনি।

সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদিরের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তৃতা করেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: আতিকুল ইসলাম, খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস্এম নজরুল ইসলাম, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অধ্যাপক আলমগীর কবির, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো: মাহবুবুর রহমান, এইম বাংলার চেয়ারম্যান সাংবাদিক মল্লিক সুধাংশু, খুলনা আইনজীবি সমিজির সভাপতি মো: সাইফুল ইসলাম, খুলনা সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ আলী সনি, সাংবাদিক মকবুল হোসেন মিন্টু, প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক মামুন রেজা, শ্যামল সিংহ রায়, খুলনা চেম্বারের পরিচালক মফিদুল ইসলাম টুটুল, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, রুনু রেজা বিথার, শাহীন জামাল পন, আসাদুজ্জামান রিয়াজ প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এধরনের আরো সংবাদ

Categories

© All rights reserved © 2019 LatestNews
Hwowlljksf788wf-Iu