খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) আইন অনুষদের সহকারী অধ্যাপক তানিয়া সুলতানার বাড়িতে ভাংচুর, চুরি ও ভাড়াটিয়াদের ভয়ভীতি দিয়ে উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়েছে একদল দূর্বৃত্ত। গত ২৬ মে শুক্রবার দুপুরে উপজেলার জলমা ইউনিয়নের পিপড়ামারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী তানিয়া ইসলাম নগরীর হরিনটানা থানায় মামলা দায়ের করে। কিন্তু গত এক সপ্তাহে ও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ মে শুক্রবার দুপুর দেড় টায় বটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা ইউনিয়নের পিপড়ামারী গ্রামে খুবির আইন অনুষদের শিক্ষিকা তানিয়া সুলতানার ভাড়া দেয়া বাড়ীতে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার গোবরচাকা মেইন রোডের মৃত আব্দুল মজিদ খানের ছেলে লিয়াকত খানের নেতৃত্বে ১৩-১৪ জন দূর্বৃত্ত জোরপূর্বক ভাড়াটিয়াদের ঘরে প্রবেশ করে মারধোর, ভাংচুর, চুরি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। ঘটনার পরের দিন ১৭ মে তানিয়া সুলতানা বাদি হয়ে হরিনটানা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় লিয়াকত খান ছাড়াও কয়রা উপজেলার হড্ডা গ্রামের আব্দুস সাত্তার সানার ছেলে মিনারুল, ঠিকানা অজ্ঞাত সোহেল মামুন পিতা ইব্রাহীম ও সোনাডাঙ্গা থানার গোবরচাকা এলাকার সানজিদাসহ অজ্ঞাত ৮-৯ জনকে আসামী করা হয়।
ভূক্তভোগী সহকারী অধ্যাপক তানিয়া ইসলাম জানান, গত ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আমি ও আমার স্বামী দুজনে জমিটির মালিক দুলাল উদ্দিন চৌধুরীর কাছ থেকে রেজিস্ট্রিমূলে ক্রয় করি। তখন থেকে আমরা জমিতে ঘর নির্মাণসহ ভোগদখল করছি। জমির চারদিকে দেয়াল দিয়ে নির্মিত ঘর ভাড়া দিয়েছি। গত ২৬ মে দুপুরে ১০-১২ জন দূর্বৃত্ত হঠাৎ করে সদলবলে এসে আমার ভাড়া দেয়া বাড়ীতে অনধিকার প্রবেশ করে ভাংচুর, লুটপাট ও ভাড়াটিয়াদের ভয়ভীতি দিয়ে উচ্ছেদের চেষ্টা চালায়। একই সাথে সন্ত্রাসীরা ঘর থেকে ৩৫ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার পরের দিন আমি হরিনটানা থানায় লিয়াকত খানসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ৮-৯ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করি। কিন্তু ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও পুলিশ অজ্ঞাত কারনে কাউকে গ্রেফতার করেনি। তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করতে গিয়ে আসামীদের পেলেও গ্রেফতার করেনি।
স্থানীয় পিপড়ামারী গ্রামের বাসিন্দা বিদ্যুৎ মন্ডল জানান, গত শুক্রবার দুপুরে আমরা দেখতে পাই একদল লোকজন শিক্ষিকা তানিয়া ইসলামের বাড়ীতে ঢুকে ভাংচুর, মারপিট ও ভাড়াটিয়াদের হুমকি দিচ্ছে। এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। তানিয়া ম্যাডামরা ৩ বছর আগে মোসলেম উদ্দিন চৌধুরীল ছেলে দুলাল উদ্দিন চৌধুরীর কাছ থেকে জমিটি কিনেছিল। জমি কিনে চারদিকে বাউন্ডারী ওয়াল দিয়ে দুটি ঘর তুলে ভাড়াটিয়ে দিয়ে জমি দেখাশুনা করছে।
প্রতিবেশী মো. ইব্রাহিম শিকদার ও মনিরুল ইসলাম জানান, জমিটির মালিক মোসলেম উদ্দিনের ছেলে দুলাল উদ্দিন চৌধুরীর কাছ থেকে গত ২০২১ সালে জমিটি কিনে চারদিকে দেয়াল দিয়েছে তানিয়া ম্যাডামরা। সেখানে ভাড়াটিয়াও আছে। হঠাৎ করে শুক্রবার আমরা হট্টোগোল শুনতে পাই। পরে গিয়ে দেখি সন্ত্রাসী লিয়াকত লোকজন নিয়ে ভাংচুর, চুরি, ভাড়াটিয়াদের মারধোর ও হুমকি দিয়েছে।
মামলার ৩নং আসামী মিনারুলের ভাই আবারুল মুঠোফোনে জানান, জমিটি আমরা ২০২২ সালের জুন মাসে দুলাল উদ্দিন চৌধুরীর ভাইদের কাছ থেকে কিনেছি। আমাদের জমিটি নিয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্টে মামলা দায়ের করেছি। যে কোন উপায়ে আমরা আমাদের জমি চাই। তার জন্য যা প্রয়োজন আমরা তা করবো।
আপনারা পরে জমি কিনে কিভাবে জমির মালিক দাবি করছেন প্রতিবেদক এমন প্রশ্ন করলে আবিরুল কোন উত্তর দেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. সোহেল রানা জানান, মামলাটি তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। আমরা আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। খুব শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করতে পারবো।