ঈদুল আযহার কিছুদিন পূর্বেই আচমকা দাম বেড়েছে কাচামরিচের। ২৮ তারিখ খুলনার বাজারে ৫০০ টাকা কেজি দরে কাচা মরিচ বিক্রয় হয়েছে। যা এখন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। দাম বৃদ্ধির কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ পড়েছেন বিপাকে। গত দুইদিন ধরে খুলনার বিভিন্ন বাজারে কাঁচা মরিচের সংকটও দেখা গেছে।
নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজারে রবিবার কাঁচা মরিচ ৭০০/ ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। বেলা ১২টার আগেই বাজারে শেষ হয়ে যায় কাঁচা মরিচ। নগরীর সোনাডাঙ্গা খোড়াবসতি বাজারে তো কাঁচা মরিচ নেই বললেই চলে আছে। যা আছে তা বিক্রয় না হওয়ার কারনে পেকে লাল হচ্ছে। এদিকে, টুটপাড়া জোড়াকল বাজারে ৭০০ টাকা দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে। দুপুর গড়ানোর পূর্বেই বাজারের অধিকাংশ দোকানে কাঁচা মরিচ শেষ হয়ে যায়। এখানে হাতে গোনা কয়েকটি দোকানে কাঁচা মরিচ বিক্রি করতে দেখা গেছে। নতুন বাজারে সকালে কাঁচা মরিচের সম্ভার দেখা যায়। কিন্তু ক্রেতারা কাঁচামরিচের দিকে তাকাচ্ছেনও না। নতুন বাজারে রবিবার কাঁচামরিচ বিক্রয় হয়েছে ৭০০ টাকায়। এদিকে, খালিশপুর সুপার মার্কেটে বাজারে ৭০০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে।
নতুন বাজারের ব্যবসায়ী কামরুল বলেন, পাইকারি ৩ কেজি কাঁচা মরিচ ২ হাজার ২০০ টাকায় কিনেছি। আড়তদারি ও পরিবহন ভাড়া মিলিয়ে ২ হাজার ৩০০ টাকা খরচ হয়। খুচরা ৮০০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি করেছেন।
তিনি আরো বলেন, এতো বছরের ব্যবসার সময়ে কখনো ৩৫০ টাকা কেজির উপরে কাঁচা মরিচের দাম উঠতে দেখিনি। এবারই প্রথম কাঁচা মরিচের এতো দাম। ঈদের আগে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। ঈদের পর দিন থেকেই দাম বাড়তে শুরু করেছে।
টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের সবজি বিক্রেতা হামিদ বলেন, প্রতিবছর এ সময়ে এলসি করা মরিচে বাজার ভরে যায়। কিন্তু এবার এখনও আসেনি। শুক্রবার বিকেলে ৩ কেজি মরিচ কিনেছিলাম। আজ ১০০ গ্রাম ৮০ টাকা হিসেবে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি।
নতুন বাজারে আসা সেজুতি বলেন, বাজারে কাঁচা মরিচের অনেক দাম। বাজারের একটি দোকানেই মরিচ পেয়েছি। ৮০০ টাকায় কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাধ্য হয়ে ২৫০ গ্রাম ২০০ টাকায় কিনেছি। কাঁচা মরিচের এতো দাম বাড়লে মানুষ সংসার চালাবে কীভাবে?
খুলনা নাগরিক সমাজ’র সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, বৃষ্টিতে কিছু ঝাল গাছ মারা গেছে, এটা সত্য। কিন্তু তাই বলে ঝালের কেজি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা হওয়ার বিষয়টি একেবারেই অস্বাভাবিক। এতো দাম বৃদ্ধির কারণ সংকট নয় বরং ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট।
উল্লেখ্য, খুলনায় এ বছর ১৭৫ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়। হেক্টর প্রতি ১৬ মেট্রিক টন হিসেবে মোট উৎপাদন হওয়ার কথা ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। যা স্থানীয় চাহিদা পূরণে সক্ষম। বৃষ্টির কারণে ডুমুরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় মরিচ ক্ষেতে পানি জমেছে। পানি জমে গাছ নষ্ট হয়েছে।