খুলনায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মুখে নগরব্যাপী জুয়া খেলা বন্ধ ও জুয়াড়ীদের বিরুদ্ধে অবশেষে অভিযানে নেমেছে খুলনা মেট্ট্রোপলিট্রন পুলিশ। শুক্রবার (৭ জুলাই) মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিশেষ অভিযানে জুয়ার সরঞ্জামসহ ৮ জুয়াড়ী গ্রেফতার হয়েছে। ডিবি পুলিশ রাত সাড়ে ১১ টায় খুলনা থানার মুন্সিপাড়া ৩য় গলি এলাকার মো. ফারুক হোসেন সাচ্চুর সেমিপাকা টিনের ঘর হতে জুয়াড়ীদেরকে গ্রেফতার করে। গত ১৩ এপ্রিল দৈনিক দেশ সংযোগ পত্রিকায় “জুয়ার নগরী খুলনা” শীর্ষক সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। শহরের সব শ্রেণীপেশা ও এলাকার মানুসের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা তৈরি হয়। এরই ধারবাহিকতায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযানে নামে। গ্রেফতারকৃতরা হলো নতুন বাজার ওয়াপদা ভেড়ীবাধ এলাকার মৃত ছাকাত সরদারের ছেলে মো. মারুফ সরদার (৩০), ট্রাংক রোড এলাকার সাগর হোসেনের ছেলে মো. ইলিয়াছ হোসেন (৩৩), রূপসা বেলায়েত হোসেন সড়কের দোলাল করিম খানের ছেলে রিফাত হায়াত খান (৩১), নতুন বাজার ওয়াপদা এলাকার ফজলুর রহমান গাজীর ছেলে মো. সুমন হোসেন (৩৪), ১৭০, টুটপাড়া মেইন রোড এলাকার মৃত সালাম গাজীর ছেলে মো. শাহীন গাজী (৩১), ৮নং মুন্সিপাড়া ৩য় গলি মো. ফারুক হোসেনের ছেলে মো. সম্রাট হোসেন তুরান (৩৪), নতুন বাজার ওয়াপদা এলাকার মীর মতিউর রহমানের ছেলে মো. রুবেল ( ৩০) ও টুটপাড়া সেন্ট্রাল রোড এলাকার নওশের আলী ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম (২৬)।
জুয়াড়ীদের নিকট হতে জুয়া খেলার সরঞ্জাম ৪৪ (চুয়াল্লিশ) সেট তাস এবং নগদ ৪৪ হাজার ৩শত টাকা আলামত হিসাবে উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত জুয়াড়ীদের বিরুদ্ধে খুলনা থানায় ১৮৬৭ সালের জুয়া আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে, জুয়াড়ীদের আটকে নগরবাসীর অনেকেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এ ধরণের অভিযান নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডের চিহ্নিত জুয়া খেলার স্থানও জুয়াড়ীদের বিরুদ্ধে পরিচালনা না করলে সার্বিক সফলতা আসবে না। সেজন্য জুয়া খেলা ও জুয়াড়ীদের গ্রেফতারে সাড়াশী অভিযান চালানোর পাশাপাশি পুুলিশের এ অভিযান আরো ব্যাপক ভিত্তিক ও ধারাবাহিকভাবে পরিচালনার দাবিও জানান তারা।
তবে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও গণমাধ্যমে খুলনা নগরীতে জুয়ার আসরের যেসকল জায়গা চিহ্নিত করে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে সে সকল স্থানে এখনও জুয়া খেলা চলছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। নগরীর চিহ্নিত জুয়াড়ীরা স্থানীয়ভাবে উঠতি মাস্তান, সন্ত্রাসী ও প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও কিছু অসাধু পুলিশ-প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের যোগসাজশে জুয়া চালিয়ে যাচ্ছে। যা সামাজিকভাবে নানা ধরণের অস্থিরতা ও সমস্যা সৃষ্টি করছে বলে সচেতন মহল দাবি করেছেন। কাজেই জুয়ার আসর ও জুয়াড়ীদের বিরুদ্ধে সমন্বিত কঠোর অভিযানের মাধ্যমে নির্মূল করার দাবিও জানিয়েছেন সামাজিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।