বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৩৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
খুলনার পি ডব্লিউ ডি স্কুলের শ্রেণিকক্ষে প্রধান শিক্ষকের পরিবারসহ বসবাস  দৈনিক খুলনা টাইমস এখন ৬ষ্ঠ বর্ষে খুলনা ডিএনসির অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার খুলনার সবজির বাজারে দামে স্বস্তি;কমেছে গোশ ও মাছের দাম  নির্বাচনের ট্রেন চলছে, কেউ থামাতে পারবে না : ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনা আমাকে এমপি না, জনতার সেবা করতে পাঠিয়েছেন : এস এম কামাল হোসেন ডলারের দাম আরও কমলো খুলনায় কয়লা ও গ্যাসসহ জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিশ্বব্যাপী নিরাপদ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিকী প্রদর্শন খুলনা—১ আসন: জনগণের জন্য কাজ করতে চান সাবেক এমপি ননী গোপাল নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আহসান হাবিব খান (অব:) এর খুলনা সফরসূচি

খুলনায় ফের বেড়েছে কিশোর গ্যাং’র দৌরাত্ব

বিশেষ প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত সময় : মঙ্গলবার, ১১ জুলাই, ২০২৩
  • ৫৬ পড়েছেন

খুলনা নগরীতে ফের বেড়েছে কিশোর গ্যাং’র দৌরাত্ব। আধিপত্য দেখাতে প্রতিনিয়ত করছে গ্রুপিং হামলা। মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ভাড়াটে হামলাকারী, জুয়ার বোর্ডের অবৈধ টাকা স্পটে আনা-নেওয়াসহ নানান অপকর্মের সাথে সরাসরি জড়িত কিশোর গ্যাংগুলো। প্রশাসণের বিশেষ নজরদারী বাড়ানো দরকার বলে মনে করছেন নাগরিক নেতারা।
কিশোর গ্যাংগুলোর সদস্যদের বয়স ১৫-২০ বছরের মধ্যে বেশী। এদের নিয়ন্ত্রনকারীদের বয়স রয়েছে আবার ২৫-৩০ বছর। তারা আবার পরিচয় দেয় বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলের। বেপরোয়া চলাফেরা এবং অর্থের যোগান দিতে মাদক ব্যবসা, ভাড়াটে মস্তান হিসেবেও কাজ করছে কিশোর অপরাধীরা। ধর্ষন, খুন, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি এদের রুটিন কাজ। নিজেদের আড়ালে রাখতে অনেকেই আবার রাজনিতীর নাম ব্যবহার করে বলছে অমুক ভাইয়ের লোক। কয়েকমাস পূর্বে ইয়াসিন আরাফাত নামে এক কিশোরকে ১০০ টাকার জন্য বাগমারা এলাকায় হত্যা করে তারই বিরোধী পক্ষ। গত বছর সেপ্টম্বরে তেলিগাতী মধ্যপাড়ায় এক তরুণীকে দলবেঁধে ধষণ করে কিশোর গ্রুপের সদস্যরা। খুলনার বাগমারা এলাকায় এক গ্রুপের কিশোররা অন্য গ্রুপের একজনকে কুপিয়ে আহত করে। খুলনার বয়রায় চাঞ্চল্যকর রাজিন হত্যাকান্ডের আসামীদের মামলার রায়ের পর বেপরোয়া আচরন ফুটে ওঠে মিডিয়াকর্মীদের ক্যামেরায়। এছাড়াও সম্প্রতি খুলনার একটি পত্রিকা অফিসে হামলাকারীদের মধ্যে দেখা যায় অধিকাংশই কিশোর।
সম্প্রতি একটি সূত্রে জানা গেছে, খুলনার রুপসা থেকে ফুলবাড়ীগেট পর্যন্ত প্রায় ২৫টির বেশী কিশোর গ্রুপ রয়েছে। যাদের কাজই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরী করে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করা। এদের মূল অর্থের উৎস্য মাদক ব্যবসা। খুলনার রূপসা এলাকায় দুইটি কিশোর গ্যাং সক্রিয়। এখানে কিং অব রূপসা নামে ৪০ জনের একটি গ্রুপ রয়েছে। লবনচরা-মাথাভাঙ্গা এলাকায় জিহাদের নেতৃত্বে ২৫ জনের একটি গ্রুপ রয়েছে। টুটপাড়া এলাকায় ২০ জনের একটি গ্রুপ রয়েছে। নিরালা আমতলার মোড়ে সন্ধ্যার পর দেখা যায় উঠতি বয়সি কিশোরদের মোটরবাইক নিয়ে শোডাউন। মুজগুন্নি এলাকায় আলিফের নেতৃত্বে ড্রাগন বয়েজ নামে ২০ সদস্যের একটি গ্যাং রয়েছে। বৈকালী এলাকায় রাকিবের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের ডেনজার বয়েজ, বয়রা পালপাড়া এলাকায় ইনজামের নেতৃত্বে ২৫ সদস্যের টিপসি গ্যাং, খুলনা বড় মাঠ মোড় এলাকায় সন্ধার পর জড়ো হয় একটি গ্রুপ। মাদক সেবনও করে সেখানেই। সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকায় হুসাইনের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের সাইক্লোন গ্রুপ, চয়নের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের বাংলা হরর, শিরোমনি-ফুলবাড়িগেট এলাকায় ফেসবুক কাজলের নেতৃত্বে ডেয়ারিং লাভার্স এবং জোড়াগেট-নিউমার্কেট জাপানী বসের নেতৃত্বে ২৫ সদস্যের ট্রিপল এক্স গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। খালিশপুর অঞ্চলেও রয়েছে একাধিক গ্রুপ। সন্ধার পর মহিলা পলিটেকনিকের মোড়ে এদের আড্ডা জমে। নিরালা মোড়ের চায়ের দোকাননগুলোতে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দেয় কয়েকটি কিশোর গ্রুপ। লোকের ভিড়ে চলে এদের মাদক ব্যবসা।
নাগরিক নেতা বাবুল হাওলাদার বলেন, খুলনাতে মাদক ব্যবসায়ী বেড়েছে। বলতে গেলে কিশোররাই এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। একটু খেয়াল করলে দেখা যায়, প্রান্তিক অঞ্চলের নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তানরাই বেশী। উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানরাও রয়েছে। বর্তমান সময়ে ক্ষমতাসীন দলের রাজজনৈতিক ব্যক্তিদের সম্মিলিত উদ্যোগে এই কিশোর গ্যাং প্রতিরোধ সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, এসকল কিশোরদের পরিবারকে আরো সচেতন করতে হবে। ওয়ার্ড পর্যায়ে এখন কমিউনিটি পুলিশের কার্যক্রম প্রসারিত হয়েছে। সকলের সমন্বয়ে এবং পুলিশের বিশেষ নজরদারীর মাধ্যমে কিশোর গ্যাং’র দৌড়াত্ব বন্ধ করা সম্ভব। তিনি উল্লেখ করে বলেন, অধিকহারে কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। অপরাধের বিপক্ষে সকলের দাঁড়াতে হবে। তাহলেই এসকল কিশোর অপরাধীদের দমন করা সম্ভব।
খুলনার অতিঃ পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মোঃ সাজিদ হোসেন বলেন, বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। কিশোর অপরাধী দমনে কেএমপি এবং সকল থানা সর্বদা সক্রিয় রয়েছে। স্কুল-কলেজের সামনে পুলিশি নজরদারী বাড়ানো হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এধরনের আরো সংবাদ

Categories

© All rights reserved © 2019 LatestNews
Hwowlljksf788wf-Iu