• E-paper
  • English Version
  • মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৫ পূর্বাহ্ন

×

বটিয়াঘাটায় শহীদ আবুল কাশেম কলেজে উপাধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি

  • প্রকাশিত সময় : মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১০০ পড়েছেন

খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার কৈয়াবাজারে অবস্থিত শহীদ আবুল কাশেম কলেজে উপাধ্যক্ষ নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম এবং দুর্নীতি হয়েছে। এ নিয়োগ পরীক্ষায় শিক্ষামন্ত্রনালয়ের দেয়া বিধি নিয়মকে তোয়াক্কা না করেই মোটা অংকের ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ প্রদাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলেজ গভর্নিং বডির পনেরোজন সদস্যের মধ্যে আটজন সদস্যই অনাস্থা প্রকাশ করে দায়ের করেছেন অভিযোগ। কিন্তু অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত না করেই উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ প্রদাণ করা হয়েছে। গভর্নিং বডির সদস্যরা এ নিয়ম ও বিধি বহির্ভূত নিয়োগ কার্যক্রমকে স্থগিত করে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন। বটিয়াঘাটা কৈয়াবাজার শহীদ আবুল কাশেম কলেজে উপাধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে গভর্নিং বডির পনেরোজন সদস্যের মধ্যে আটজন সদস্য অনাস্থা প্রকাশ করেছেন এবং একজন সদস্য নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছেন। কলেজ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে এ নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। অভিযোগ দায়ের করেও কোন প্রতিকার না পাওয়াতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শহীদ আবুল কাশেম কলেজ গভর্নিং বডির আটজন সদস্য। অভিযোগ সূত্রে, গত ১৬ই মার্চ শহীদ আবুল কাশেম কলেজে উপাধ্যক্ষ ও ল্যাব সহকারী (জীব বিজ্ঞান) পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে নিয়োগ সংক্রান্ত বিধি বিধান থাকা সত্ত্বেও বিধি বিধান মানা হয়নি। যেখানে নিয়োগ বিধির পরিপত্র অনুযায়ী প্রার্থীদের আবেদনপত্র সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করা হয়নি, ছবিসহ প্রবেশপত্র প্রদানের বিধান থাকা সত্ত্বেও প্রবেশপত্রের সাথে প্রার্থীর ছবি সীল যুক্ত অবস্থায় প্রদান করা হয়নি, পরিপত্রের প্রদত্ত বিধান লংঘন করে হাতে লেখা প্রশ্নপত্র প্রস্তুত করে লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে, লিখিত পরীক্ষার পাশ নম্বর ৪০% নির্ধারণ করা থাকায় এবং উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করার বিধান স্পস্ট থাকা সত্ত্বেও অনুত্তীর্ন প্রার্থীদেরও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে কিন্তু লিখিত পরীক্ষায় মাত্র দুইজন পাশ করেছেন, নিয়োগ বোর্ডের সকল সদস্যগণের কোন প্রার্থীর সাথে কোন আত্মীয়তার সম্পর্ক নাই মর্মে ঘোষণাপত্র প্রদানের বিধান পরিপত্রে থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ বোর্ডের কোন সদস্য এমন ঘোষণা পত্র প্রদান করেননি, বিধি মোতাবেক লিখিত পরীক্ষার মান বন্টন প্রবিধান অনুযায়ী করা হয়নি ফলে বিশেষ প্রার্থী সুবিধা প্রাপ্ত হয়েছে। এমনকি জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি মনোনয়নের চিঠি নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। অন্য একটি অভিযোগ বলছে, অধ্যক্ষ এস,এম, আরিফুল ইসলাম মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে এ অবৈধ নিয়োগকে জোরপূর্বক বৈধ করার চেষ্টা করছেন। তিনি দফায় দফায় গোপন মিটিং করে খুলনার বয়রার ইসলামিয়া কলেজের সহকারী অধ্যাপক জিএম মোবারককে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে নিয়োগ প্রদাণের কৌশল অবলম্বন করেছেন। কলেজ গভর্নিং বডির নয়জন সদস্য যার বিরোধিতা করে এ নিয়োগ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগসূত্র আরো বলেছে, এ নিয়ে কলেজে সকলের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়েছে। পনেরো লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণ করে অধ্যক্ষ এ অনিয়ম করেছেন। শহীদ আবুল কাশেম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রনব কান্তি মন্ডল বলেন, বটিয়াঘাটায় শহীদ আবুল কাশেম কলেজে উপাধ্যক্ষ নিয়োগ কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার পাশ নম্বর ৪০% নির্ধারণ করা থাকলেও, উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করার বিধান স্পস্ট থাকা সত্ত্বেও অনুত্তীর্ন প্রার্থীদেরও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে কিন্তু লিখিত পরীক্ষায় মাত্র দুইজন পাশ করেছেন। যেখানে লিখিত পরীক্ষায় তিনজন পরীক্ষার্থী পাশ না করলে এ নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করার বিধান রয়েছে। গভর্নিং বডির ১৫ জন সদস্যের মধ্যে আটজন সদস্যই জানেন না যে অধ্যক্ষ কবে ও কখন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। অধ্যক্ষ এবং কলেজের সভাপতি নিজেদের মতো করে মিটিং করে আমাদের মিটিংয়ের রেজ্যুলেশনে স্বাক্ষর করতে বলেন। কিন্তু আমরা বিস্তারিত এ বিষয়ে অবগত না হওয়াতে স্বাক্ষর করিনি। আমরা এ নিয়োগ প্রক্রিয়াকে অনাগ্রসর করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। কিন্তু বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাদেরকে আইন মেনে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলেছেন। কিন্তু আমরা অভিযোগ দাখিল করা সত্ত্বেও তিনি এ নিয়োগ কার্যক্রমকে স্থগিত না করে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ প্রদাণ করেছেন। প্রনব কান্তি মন্ডল আরো বলেন, তিল তিল করে এ কলেজ প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমরা গভর্নিং বডির সদস্যরা অনেক শ্রম দিয়েছি। কিন্তু আজ এ কলেজের মধ্যেই অনিয়ম ঢুকে গেছে। শহীদ আবুল কাশেম কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য তুলসী দাস মল্লিক বলেন, আমরা আটজন সদস্য উপাধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়ম হওয়াতে অভিযোগ দায়ের করেছি। এছাড়াও অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কলেজ সভাপতি ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অনুরোধ করেছি । তিনি আরো বলেন, আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। নিয়োগ একাধিক অনিয়ম কি কারনে হয়েছে? তা তদন্ত করলেই আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে এ বিষয়ে অধ্যক্ষ এবং বটিয়াঘাটা নির্বাহী অফিসারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে মুঠোফোনে সংযোগ করা সম্ভব হয়নি।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA