রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৭:৩৩ অপরাহ্ন

ধামাচাপায় বনমালী হত্যা মামলা

দেশ প্রতিবেদক:
  • প্রকাশিত সময় : শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৭২ পড়েছেন

খুলনার রেলষ্টেশন এলাকার ব্যবসায়ী বনমালী মন্ডল গত বছর হত্যার শিকার হওয়ার পর তার ম্যানেজার হেমন্ত হঠাৎ করে উধাও হয়ে যান। বনমালীর ভাই কেশব মন্ডল বাদী হয়ে মামলা করার পর তিনি লোক চক্ষুর সামনে আসেন। এরপর মামলার ১ নং আসামী অমিত ঘোষের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে শুরু করেন ম্যানেজারের কাজ। অভিযোগ রয়েছে , হত্যাকান্ডের বিষয়ে ম্যানেজার কিছু জানে বিধায় অমিত ঘোষ অর্থ এবং চাকুরী দেয়ার মাধ্যমে হেমন্তকে নিজ আয়ত্ত্বে রেখেছেন। কদমতলা ব্যবসায়ী মহলে আলোচিত যে, অমিত ঘোষ বনমালীর ম্যানেজারকে চাকুরী দিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢেকে রেখেছেন। এ নিয়ে আজকের ধারাবাহিক পর্বের দ্বিতীয় পর্ব। ঘটনাসূত্রে, কয়রা উপজেলার ৬নং কয়রার বাসিন্দা যতীন্দ্রনাথ মন্ডলের ছেলে ব্যবসায়ী বনমালী মন্ডল (৪২) ২০২৩ সালের ২৫শে জুন নিখোঁজ হন। পরদিন ২৬ জুন সকালে খুলনা রেলওয়ে ইয়ার্ডে ব্যবসায়ী বনমালীর লাশ লোকজন দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এর কিছুদিন পর নিহতের স্ত্রী সীমান্তী মন্ডলকে না জানিয়েই নিহতের ভাই কেশব মন্ডল বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে এই কেশব মন্ডলই হত্যা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেন। প্রায় এক কোটি টাকা অর্থ দিয়ে ধামাচাপা দিয়েছেন মূল ঘটনা। মামলার স্বাক্ষীদেরই রেখেছেন নিজ ছত্র ছায়াতে। হত্যা মামলায় ছয় জনের নাম উল্লেখ করে বনমালীর ভাই কেশব মন্ডল মামলা দায়ের করেন। তারা হলেন— অমিত ঘোষ (৫০) ২। মিঠু ঘোষ (৪০) ৩। মিতা (৩৫) স্বামী—অমিত ঘোষ, ৪। সঞ্জিব ঘোষ (৪৫) ৫। মোঃ মিন্টু (৩৫) ৬। সাধন ঘোষ (৫৫)। কিন্তু টাকা দিয়ে এবং প্রভাবশালী একটি মহলকে ম্যানেজ করে হত্যার পুরো বিষয়টি ধামাচাঁপা দেয়ার চেষ্টা করছেন অমিত ঘোষ। নিহত বনমালী মন্ডলের ম্যানেজার হেমন্ত বলেন (২৬ শে জুন’২৩), ২৫শে জুন দাদাকে (বনমালী মন্ডল) অনেকবার কল করে পাইনি। পরে সন্ধ্যার দিকে আমার হটসএপে একটি ম্যাসেজ আসে। যেখানে জানতে পারি, দাদাকে (বনমালী মন্ডল) কেউ আটকে রেখেছেন। তিনি আরো বলেন, অমিত ঘোষের আড়তে দাদা (বনমালী মন্ডল) দীর্ঘদিন চাকুরী করেছেন। কিছুদিন যাবৎ বনমালী দাদার সাথে অমিত ঘোষের মনোমালিন্য চলছিলো। একটি চেক সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অমিত ঘোষ হুমকি দিয়েছিলেন। অমিত ঘোষ মানষিকভাবে দাদাকে (বনমালী মন্ডল) অনেক হেনস্থা করছিলো। দাদা এ নিয়ে অনেক আতঙ্কে ছিলেন। বনমালী দাদাকে ব্যবসা ছেড়ে খুলনা ত্যাগ করতে বলেন অমিত ঘোষ। নইলে বনমালী দাদাকে শেষ করে ফেলবে বলেও হুমকি দিয়েছেন। সত্য সত্য দাদার সাথে এমন ঘটনা ঘটবে তা আমরা বুঝতে পারি নাই। অভিযোগ সূত্রে, নিহত বনমালী মন্ডলের ভাই কেশব মন্ডল এবং ম্যানেজার হেমন্ত অর্থের বিনিময়ে বনমালীর হত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য অমিত ঘোষকে সাহায্য করছে। তারা মিথ্যা স্বাক্ষ্য দিয়ে অমিত ঘোষকে বাঁচানোর কৌশল করেছেন। ব্যবসায়ী বনমালী মন্ডলকে নির্মমভাবে হত্যা করিয়ে তা এখন ধামাচাঁপা দেয়া ও হত্যাকান্ডের ঘটনা আত্মহত্যা বলে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন অমিত ঘোষ। এজন্য অমিত ঘোষ সকলকে টাকা দিয়ে মুখ চাপিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। বনমালীর একজন বন্ধু বলেন, বনমালী একজন হাস্যোজ্জল মানুষ ছিলেন। অনেক পরিশ্রমি মানুষ ছিলেন। ব্যবসায় দক্ষ হওয়াতে অনেক দ্রুত উন্নতি করেছেন। পরিবারের অনেককেই লেখা পড়া করিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। বনমালী নিহত হওয়ার পরে তার স্বজনরা কয়রাতে মানববন্ধনও করেছেন। বনমালী সবসময় তার ব্যবসা বানিজ্য নিয়েই থাকতেন। সব সময় পরিবার পরিজনের ভালো হয় কীভাবে সেদিকে অনেক খেয়াল রাখতেন। বনমালী নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শুরু করার পর অনেক ব্যস্ত সময় কাটাতেন। তবে সে আত্মহত্যা করার মতো মানুষ নন। অনেক সাহসী মানুষ ছিলেন বনমালী। তার মৃত্যুর ঘটনাটি ভালোভাবে তদন্ত করলে হত্যাকারীদের পরিচয় বেরিয়ে আসবে। এদিকে, বনমালী মন্ডলের সাবেক ম্যানেজার হেমন্তর ফোনে কল করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। চলবে…….

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এধরনের আরো সংবাদ

Categories

© All rights reserved © 2019 LatestNews
Hwowlljksf788wf-Iu