• E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন

×

অবশেষে বহুল কাংখিত খুলনা-মোংলা যাত্রীবাহি রেল সার্ভিস চালু

  • প্রকাশিত সময় : শনিবার, ১ জুন, ২০২৪
  • ৫১ পড়েছেন
* মোংলা বন্দরের সঙ্গে ট্রানজিট পন্য পরিবহনে যুক্ত হবে ভারত, ভুটান ও নেপাল  * গতিশীল হবে বন্দরের কার্যক্রম এবং বাড়বে পর্যটন খাতে যাতায়াত সুবিধা
মোঃ হাসান গাজী, মোংলা:
উদ্বোধনের সাত মাস পর অবশেষে মোংলাবাসীর বহুল কাংখিত খুলনা-মোংলা যাত্রীবাহি রেল সার্ভিস চালু হয়েছে। প্রতিষ্ঠার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৭৩ বছর পর রেল যোগাযোগে যুক্ত হয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলা। প্রথম অবস্থায় নতুন এই রুটে আগে থেকে চলাচলরত খুলনা-বেনাপোল রুটের বেতনা কমিউটার লোকাল ট্রেনটিকে মোংলা কমিউটার নামকরন করে মোংলা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত চলাচলের মধ্যে দিয়ে যাত্রীবাহি ট্রেন চলাচলের সূচনা করা হয়। তবে সোয়া ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ রেলপথে প্রথম অবস্থায় ট্রেন চলবে মাত্র একটি।
শনিবার সকালে বেনাপোল স্থল বন্দর থেকে ‘মোংলা কমিঊটার’ নামক এ ট্রেনটি দুপুরের দিকে মোংলা পৌঁছে। এ সময় উৎফুল্ল মোংলাবাসী ট্রেনটিকে স্বাগত জানায়। পুরনো বেতনা এক্সপ্রেসের পুরাতন বগি এবং ইঞ্জিন দিয়েই শুরু হয়েছে মোংলা-বেনাপোল ট্রেন চলাচল। এ দিকে খুলনা-মোংলা পথে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা এখন মোংলা বন্দর দিয়ে দ্রুত ও কম খরচে মালামাল নিতে পারবে। ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। সুন্দরবন কেন্দ্রীক পর্যটন বিকাশে আরো সহায়ক হবে এ রুট। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দর দিয়ে দ্রুত সময়ে ও কম খরচে মালামাল নিতে পারবেন। গতিশীল হবে মোংলার সঙ্গে যাতায়াত সুবিধা। এ ছাড়া পরবর্তীতে এ রেল পথে মোংলা বন্দরের সঙ্গে ট্রানজিট পন্য পরিবহনে যুক্ত হবে ভারত, ভুটান ও নেপাল।
প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন হয়। জমি অধিগ্রহণ, রেললাইন, রেলসেতু নির্মাণসহ পুরো প্রকল্পের ব্যয় তখন ধরা হয়েছিল এক হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এরপর ২০১৫ সালে সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এরপর ২০২১ সালে ফের সময় ও ব্যয় বাড়ে। তখন ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সেই মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত করা হয়।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১লা নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে ভার্চুয়ালি খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এর আগে ৩০ অক্টোবর ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে রেল চালানো হয়। এরপর কয়েক দফায় বাণিজ্যিকভাবে এ রুটে রেল চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তা আর চালু করা যায়নি।
রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালকুদার বলেন, আপাতত ‘বেতনা কমিউটার’ ট্রেনটি বেনাপোল থেকে মোংলা কমিউটার ট্রেন হয়ে বেনাপোল-মোংলা রুটে চলাচল করবে। পরবর্তীতে আরেকটি রেক দিয়ে এই রুটে ট্রেন চলাচলের পরিকল্পনা রয়েছে।
রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট আব্দুল আওয়াল জানান, ৯৬/৯৫ বেতনা কমিউটার ট্রেনটি ফুলতলা-খুলনা-ফুলতলা সেকশনে চলাচল করবে না। ট্রেনটি মোংলা কমিউটার নামে পরিচালিত হবে। ট্রেনটিতে দ্বিতীয় আসন ব্যবস্থা থাকবে। ট্রেনের আসন সংখ্যা ৬৭৬টি। এই রুটে ডে অফ থাকবে প্রতি মঙ্গলবার। সকাল সাড়ে ৯টায় বেনাপোল থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যাবে মোংলার উদ্দেশে। ট্রেনটি পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে। এরপর মোংলা থেকে ট্রেনটি ছাড়বে দুপুর ১টায় এবং বেনাপোলে পৌঁছাবে বিকেল সাড়ে ৪টায়। এই রুটের দূরত্ব ১৩৮ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার।
এ রুটে মোংলা থেকে খুলনায়  (মোহাম্মদ নগর) ৩৫ টাকা, যশোরে ৬৫ ও বেনাপোলে ৮৫ টাকা করে ভাড়া নির্ধারন করা হয়েছে।
সূচি অনুযায়ী, মোংলা কমিউটার’ বেনাপোল থেকে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে মোংলা পৌঁছাবে ১২টা ৩৫ মিনিটে। এর মধ্যে নতুন এই রুটে যাত্রাবিরতি নাভারণে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে, ঝিকরগাছায় ৯টা ৫০ মিনিটে, যশোরে ১০টা ১১ মিনিটে, সিঙ্গিয়ায় ১০টা ৩০ মিনিটে, নোয়াপাড়ায় ১০টা ৪৬ মিনিটে, ফুলতলায় বেলা ১১টা ৪ মিনিটে, মোহাম্মদগর স্টেশনে ১১টা ৩১ মিনিটে, কাটাখালী স্টেশনে ১১টা ৫০ মিনিটে, চুলকাটি বাজারে ১২টা এবং মোংলায় পৌঁছাবে ১২টা ৩৫ মিনিটে।
ফিরতি ট্রেনটি মোংলা থেকে দুপুর ১টায় ছেড়ে বেনাপোল পৌঁছাবে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে। এর মধ্যে চুলকাটি বাজারে ১টা ২২ মিনিটে, কাটাখারীতে ১টা ৪০ মিনিটে, খুলনার মোহাম্মদনগরে ১টা ৫৯ মিনিটে, ফুলতলায় ২টা ২৫ মিনিটে যাত্রাবিরতি করে নোয়াপাড়ায় ২টা ৩২ মিনিটে, চেঙ্গুটিয়ায় ২টা ৫২ মিনিটে, সিঙ্গিয়ায় বিকেল ৩টা ১১ মিনিটে, যশোরে ৩টা ৩০ মিনিটে, ঝিকরগাছা ৩টা ৫২ মিনিটে, নাভারণে বিকেল ৪টা ১১ মিনিটে এবং বেনাপোলে পৌঁছাবে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA