• E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন

×

ডুমুরিয়ায় চেয়ারম্যান পদে ভোট হচ্ছে যোগ-বিয়োগ তারপরও হতে পারে ৩ প্রার্থীর হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই

  • প্রকাশিত সময় : রবিবার, ২ জুন, ২০২৪
  • ৭৯ পড়েছেন

ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধিঃ
ঘুর্ণিঝড় রিমালের কারণে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাচন স্থাগিত করা হলেও অবশেষে তার দিনক্ষণ হয়েছে নির্ধারণ। ভোট গ্রহন হবে আগামী ৯ জুন রোববার। তবে এরই মধ্যে দেখা যাচ্ছে ভোটারদের মতের পরিবর্তন। এতে কোন কোন প্রার্থীর কপাল খুলছে, আবার কারো কারো হচ্ছে সর্বনাশও। তার মধ্যে বেশি উল্টে পাল্টে যাচ্ছে চেয়ারম্যান পদে ভোট। জানা গেছে, আগামী ৯জুন রোববার অনুষ্ঠিত হবে ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহন। যা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল গত ২৯ মে বুধবার। কিন্তু ঘুর্ণিঝড় রিমালের কারণে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে তা স্থাগিত করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ভোট গ্রহনের দিন হিসেবে ৯ জুন নির্ধারণ করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীরা। তবে ভোট গ্রহনের দিন পিছিয়ে যাওয়ায় এরই মধ্যে অনেক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে চেয়ারম্যান পদে ভোট নিয়ে বেশ ওলোট পালোট হচ্ছে। এই পদে কারো ভোট বাড়ছে, আবার কারো কমছে। ফলে তাদের মধ্যে কারো হচ্ছে সর্বনাশ, আবার কারো হচ্ছে উপকার।জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী হলেন ৩জন। তারমধ্যে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন এজাজ আহমেদ এবং অপর দুই প্রার্থীর মধ্যে আনারস প্রতীকে লড়ছেন মনিমুর রহমান নয়ন আর মোটর সাইকেল প্রতীকে লড়ছেন আজগর বিশ্বাস তারা। প্রতিদ্বন্ধী এই ৩ প্রার্থীর মধ্যে হবে ভোট যুদ্ধ। সেক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধাজনক স্থানে আছেন আনারস প্রতীকের মনিমুর রহমান নয়ন। তিনি পেশায় এ্যাডভোকেট এবং রাজনীতিতে বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি বিএনপি নেতা মোল্ল্যা আবুল কাশেমের পুত্র এবং উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোল্ল্যা মোশাররফ হোসেন মফিজের ভাইপো। এছাড়া তরুণ নেতৃত্বেও তার রয়েছে একটা শক্ত অবস্থান। রাজনৈতিক ভাবে এ নির্বাচন বিএনপি-জামাত বয়কট করলেও ডুমুরিয়ায় তার কোন প্রভাব পড়েনি। ভেতরে ভেতরে বিএনপি জামাতের স্রোতের ধারা রয়েছে তার দিকেই। এরই মধ্যে তাদেরকে নিয়ে আনারস প্রতীকের পক্ষ্যে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে গঠন করা হয়েছে নির্বাচনী টীম। এছাড়াও পাড়া-মহল্লায় আছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। যাতে বিএনপি জামাতের নেতাকর্মী ছাড়াও সম্পৃক্ত আছে মোল্ল্যা পরিবারের সুহৃদ ব্যক্তিবর্গ। ফলে এ নির্বাচনে আনারস প্রতীকের মনিমুর রহমান নয়ন আছেন অনেক সুবিধাজনক অবস্থানে। তাছাড়া নির্ধারিত তারিখে ভোট না হওয়ায়, সেক্ষেত্রেও তার জন্য সুফল দেখা যাচ্ছে। কারণ তার পক্ষ্যে থাকা নির্বাচন পরিচালনা টীমের কর্মীরা দলবদ্ধ হয়ে যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। ফলে প্রচার-প্রচারণার এই ধারা অব্যাহত থাকলে হয়তঃ তিনিই হতে পারেন সৌভাগ্যবান ব্যক্তি।

চেয়ারম্যান পদে আরেক প্রার্থী হলেন মোটর সাইকেল প্রতীকের মোঃ আজগর বিশ্বাস তারা। রাজনৈতিক ভাবে তিনি খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য। এছাড়াও তিনি বিশ্বাস প্রোপাইটিজের মালিক। উপজেলা বাসীর কাছে প্লট ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি বেশি পরিচিত। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান পদে মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধী করছেন। মুলতঃ দান-অনুদানের মধ্যে দিয়ে তার বেশি প্রচার ঘটে। বিশেষ করে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসেবে ওয়াজ মাহফিল, নামযজ্ঞ বা পূজার অনুষ্টানে যোগদান এবং সেখানে আর্থিক অনুদান দেয়া। এছাড়া অনেক মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণে তার সহায়তা দেয়া আছে। ওইসব প্রতিষ্ঠানের লোকজন তার ওই দান অনুদানের কথা মনে রেখেছে। তাদের মধ্যে অনেকেই গোপনে গোপানে তার পক্ষ্যে কাজ করছেন। ফলে নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ায় তারও যথেষ্ট সুবিধা হয়েছে। এরই মধ্যে উপজেলার সাহস, শরাফপুর, খর্ণিয়া, ডুমুরিয়া-সদর, আটলিয়া ও গুটুদিয়া ইউনিয়নে তার ভোটের উন্নতি দেখা যাচ্ছে। তার প্রচার-প্রচারণার এ ধারা অব্যাহত থাকলে হয়তঃ তিনিও পরতে পারেন বিজয়ের মালা।

চেয়ারম্যান পদে অপর প্রার্থী হলেন ঘোড়া প্রতীকের এজাজ আহমেদ। তিনি সদ্য বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান। খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মরহুম গাজী আব্দল হাদীর পুত্র তিনি। ডুমুরিয়া উপজেলা জুড়েই তার ব্যাপক পরিচিতি। সমস্ত ওলি-গলি তার চেনা-জানা। খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে তার ওঠাবসা। ফলে ঘোড়া প্রতীকে এজাজ আহমেদের রয়েছে বিশাল জনভীতি। বিগত নির্বাচনে তিনি প্রায় দ্বিগুণ ভোটে জয়লাভ করেছিলেন। তার কর্মী-সমার্থকরা এবারও সেই ধারা অব্যাহত রাখতে চান। এরই মধ্যে তার প্রচার-প্রচারনাও চলছে সেই ভাবে। তবে প্রচারণার ক্ষেত্রে তার পজিটিভ দিক হল ভুমিমন্ত্রী, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি পরিবার। নির্বাচনে ভূমিমন্ত্রীর কোন প্রকার সম্পৃক্ততা না থাকলেও তার পরিবারের লোকজন এমনকি আত্মীয়-স্বজনরা ঘোড়া প্রতীকের পক্ষ্যে প্রচার প্রচারণা করছেন। ফলে মন্ত্রী পরিবার কারো পক্ষ্যে কাজ করলে সে প্রার্থীর বিজয় অনেকটাই সুনিশ্চিত। এছাড়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরাও দলমত নির্বিশেষে তার পক্ষ্যে আছেন। নির্বাচনী এ অবস্থা ধরে রাখতে পারলে হয়তঃ তিনি আবারও পরতে পারেন জয়ের মালা। তবে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদের এমন জনপ্রিয়তার পরও ভোটের মাঠে মিলছে নানান আভাস। এরই মধ্যে কারো কারো ভোট সরে যাচ্ছে। আবার কারো কারো ভোট বেড়ে যাচ্ছে। দিন যতই যাচ্ছে ততই যেন কঠিন লড়াই’র মুখে পড়ছেন ৩জনই।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA