• E-paper
  • English Version
  • মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০০ পূর্বাহ্ন

×

আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জন্য কঠিন ম্যাচ

  • প্রকাশিত সময় : মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০২৪
  • ৪৮ পড়েছেন

ড. সাঈদুর রহমানের কলাম:

সহজ কোন ম্যাচ নয়। বলা যায়, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে কঠিন পরীক্ষা দিতে হতে পারে বাংলাদেশকে। বর্তমানে আইসিসির টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের চেয়ে একধাপ এগিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ রয়েছে ৯ নম্বরে এবং আফগানিস্তান রয়েছে ১০ নম্বরে। তবে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে যদি আফগানিস্তান র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশি চেয়ে এগিয়ে যায়, তাহলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। এবারের বিশ্বকাপে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত পারফরমেন্সের বিচারে বোলিং এবং ব্যাটিং -এই দুই ক্ষেত্রেই শীর্ষে রয়েছেন দুই আফগান ক্রিকেটার (এই কলাম লেখা হয়েছে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের আগে)।
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত ৬ ম্যাচ খেলে আফগানিস্তানের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান রাহমানুল্লাহ গুরবাজ ২৩৮ রান করে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ১ নম্বরে রয়েছেন। আর আফগানিস্তানের ফজলহক ফারুকী ১৫ উইকেট নিয়ে বোলারদের মধ্যে সবার উপরে রয়েছেন। এবারের বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরানের ফিফটি রয়েছে ৫টি, গুরবাজের ৩টি এবং জাদরানের ২টি। অন্যদিকে এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদের কেউ এখনো পর্যন্ত কোনো ফিফটি করতে পারেননি। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ব্যাট থেকে একটি মাত্র ফিফটি এসেছে। সাকিব আল হাসান নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ৪৬ বলে অপরাজিত ৬৪ রান করেছিলেন। এছাড়া আর কোন ফিফটি নেই। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সর্বশেষ ম্যাচ জিতে দারুণভাবে উজ্জীবিত এই মুহূর্তে আফগানিস্তান দল। তাছাড়া তারা যেহেতু সেমিফাইনালের সুবাস পাচ্ছে, তাই অন্যরকমের উদ্দীপনা তাদের ভেতরে কাজ করার কথা। আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা সবাই দলের জন্য কিছু না কিছু অবদান রাখছেন। আফগানিস্তানের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার নিয়মিত আইপিএল-সহ অন্যান্য ফ্রাঞ্চাইজি লীগে অংশগ্রহণ করার কারণে তাদের ভেতর টি-টোয়েন্টি ম্যাচের স্পিরিট অনেক বেশি কাজ করে। রশিদ খান, মোহাম্মদ নবী, গুলবদিন নাইব, রহমানুল্লাহ গুরবাজ , ইব্রাহিম জাদরান, নুর আহমাদ-রা আইপিএলের নিয়মিত মুখ। ফলে টি-টোয়েন্টিতে ভালো করার জন্য যে ধরনের পেশাদারিত্ব, প্রেসার সিচুয়েশন ট্যাকল করার ক্ষমতা ইত্যাদি থাকা দরকার তার সবকিছুই আফগান ক্রিকেটারদের মধ্যে ভালোভাবেই রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে আফগানিস্তানের বোলাররা ১০টি উইকেট তুলে নিলেও, বিস্ময়করভাবে তাদের মেইন স্ট্রাইক বোলার ফজলহক ফারুকী কোন উইকেট পাননি। ফারুকীর নতুন বলের পার্টনার নাভিন-উল-হক দুর্দান্ত বল করেছেন। গুলবদিন নাইব তো ছিলেন আরো অপ্রতিরোধ্য। ২০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তিনি হয়েছিলেন ম্যাচ সেরা। আমার মনে হচ্ছে, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে বাংলাদেশ যদি পাওয়ার প্লের ব্যাটিং তুলনামূলকভাবে ভালো করতে না পারে, তাহলে ম্যাচ জেতা কঠিন হবে। আফগানিস্তানের দুই ওপেনার এই মুহূর্তে দারুণ ছন্দে রয়েছেন। একবার উইকেটে সেট হয়ে গেলে তারা পাওয়ার প্লে খুব ভালোভাবেই কাজে লাগাতে পারবেন, যেমনটা তারা করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। অন্যদিকে বাংলাদেশের ওপেনাররা যদি শুরুতেই আউট হয়ে যান, তাহলে বাংলাদেশ চাপে পড়বে এবং পাওয়ার প্লের তুলনামূলক হিসাবে পিছিয়ে পড়বে। তাই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের উদ্বোধনী জুটিতে একটা ভালো পার্টনারশিপ হওয়া দরকার। তাহলে কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান এ পর্যন্ত ১১ বার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ৫ বার এবং আফগানিস্তান জিতেছে ৬ বার। বাংলাদেশের বোলাররা যেহেতু ভালো করছে, তাই বাংলাদেশ যদি আফগানিস্তানকে ১৫০ এর নিচে আটকে রাখতে পারে, তাহলে ম্যাচ জেতার ভালো সম্ভাবনা থাকবে। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে অবশ্যই তাসকিন আহমেদকে একাদশে ফিরিয়ে আনতে হবে। শেখ মাহাদি হাসান আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খুব বেশি কার্যকর হবেন বলে আমার মনে হয় না। মুস্তাফিজুর রহমানকে আরো পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করতে না পারলে তার কাছ থেকে খুব বেশি সুফল পাওয়া যাবে না। রিশাদ হোসেন এবং সাকিব আল হাসান আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। ভারতের বিরুদ্ধে মাহমুদ‌উল্লাহ রিয়াদ যথেষ্ট ভালো বল করেছিলেন। তিনি ২ ওভারে মাত্র ৮ রান দিয়েছিলেন। এরকম ক্ষেত্রে পার্টটাইম বোলার হওয়া সত্ত্বেও তাকে দিয়ে আরও একটি ওভার বল করানো যেত কিনা, সেটা বিবেচনা করা দরকার। এই মুহূর্তে আফগানিস্তান কঠিন প্রতিপক্ষ, তবে বাংলাদেশ নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে, তাদের বিরুদ্ধে জয় পাওয়া সম্ভব।

লেখক: জাতীয় ক্রীড়া ভাষ্যকার, বেতার ও টেলিভিশন।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA