আপডেট-১
চিতলমারী থানা পুলিশের কান্ড:
প্রকাশ্য দিবালোকে হাতভেঙ্গে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই'র স্থলে চুরি মামলা রেকর্ড
এম এম মফিজুর রহমান, মোল্লাহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটের চিতলমারীতে প্রকাশ্য দিবালোকে মহাসড়কে ঠেকিয়ে সীমাহীন নির্যাতনের মাধ্যমে হাত ভেঙ্গে ফেলাসহ ১০ লাখ টাকা কেড়ে নেয়ার ঘটনায় ছিনতাই অভিযোগ করলেও চুরির মামলা রেকর্ড করেছে থানা পুলিশ। ওই ঘটনার দিন গত ১৩ জুন অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে চিহ্নিত মোঃ তালহা ইবনে হুসাইনকে আটক করে চিতলমারী থানা পুলিশ। এর বেশ কয়েক ঘণ্টা পর প্রভাবিত হয়ে ছিনতাই'র স্থলে চুরি মামলা রেকর্ড ও আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়। ফলে মাত্র ৪দিন পর জামিনে বেরিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ভিকটিম ও তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে ওই ঘটনার প্রধান তালহা। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনায় এহেন কর্মকান্ডের অভিযোগ করেন ভিকটিম ও তার পরিবারের সদস্যরা।
এজাহার ও ভিকটিম সুত্রে প্রকাশ, মোল্লাহাট উপজেলার চর আটজুড়ী গ্রামের মহিব্বুল শিকদার পিরোজপুরের নাজিরপুরে নির্মাণাধীন সরকারি কৃষি খামার প্রজেক্টের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন। ঘটনার দিন গত ১৩ জুন সকালে নিজ এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য শঙ্করের সাথে মটরসাইকেলে চড়ে নির্মাণাধীন উক্ত প্রজেক্টের বিলের ১০ লাখ টাকা নিয়ে কর্মস্থল নাজিরপুর যাচ্ছিলেন তিনি। বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে চিতলমারী উপজেলাধীন বাংলা বাজারের নিকট গোপালগঞ্জ - পিরোজপুর মহাসড়কে ওৎপেতে থাকা ৭/৮ জন দুস্কৃতিকারী তাদের গতিরোধ করে টাকা ভর্তি ব্যাগ চায়। তখন টাকার ব্যাগ দিতে অস্বীকৃতি জানালে লোহার রড সহ দেশীয় বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি হামলা চালায় তারা। উক্ত হামলায় মটরসাইকেল থেকে সড়কের মাঝে পড়ে গেলেও টাকার ব্যাগ ধরে রাখে প্রজেক্ট ম্যানেজার মহিব্বুল। তখন রড দিয়ে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে ১০ লাখ টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুস্কৃতিকারীর দল। এরপর আশপাশের লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার ও হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ওই দিনই ভিকটিমের স্ত্রী বেদেনা বেগম চিতলমারী থানায় ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার মূলহোতা চিতলমারী উপজেলাধীন কুরমনি গ্রামের শাহাদাত হোসেনের ছেলে তালহা ইবনে হুসাইন (৩৫)'কে ওই দিনই আটক করে পুলিশ। এর বেশ কয়েক ঘণ্টা পর দুস্কৃতিকারীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কৌশলে অভিযোগকারীর থেকে এজাহারে সাক্ষর নিয়ে ছিনতাইয়ের স্থলে চুরি মামলা রেকর্ড করে থানা পুলিশ। পরদিন ১৪ জুন তালহাকে আদালতে পাঠানো হয়। এরপর এক সপ্তাহ না যেতেই ১৯ জুন জামিনে মুক্তি পেয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ভিকটিম ও তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিয়ে চলছে তালহা। এঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও ন্যায় বিচারের দাবিতে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভিকটিম ও তার পরিবারের সদস্যরা।
এবিষয়ে চিতলমারী থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ সফিউল আলম জানান, মামলা রেকর্ড কালে থানা অফিসার ইনচার্জ ছিলেন মোঃ ইকরাম হোসেন এবং তিনি ছিলেন ইন্সপেক্টর (তদন্ত)। মামলা রেকর্ডের পর ওসির বদলি হয়েছে এবং তিনি এখন ওসি। সফিউল আলম আরো বলেন, এর কোন সাক্ষী নাই এবং রাতের ঘটনা বলেও উল্লেখ করেন তিনি। প্রকাশ্য দিবালোকে সীমাহীন মারপিটের মাধ্যমে হাড়ভাঙ্গা জখম করে ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় চুরি মামলা কিভাবে হয় ? এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি অফিসার ইনচার্জ সফিউল আলম।এছাড়া তিনি বলেন, এজাহারে বেআইনী জনতাবদ্ধে মারপিটে সাধারণ জখম, হাঁড়ভাঙ্গা গুরুতর জখম চুরি ও ভয়ভীতি প্রদানের অপরাধ সহ ১০ লাখ টাকা চুরির বিষয় উল্লেখ আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক ও সুধীজন বলেন, যে মামলায় বেআইনী জনতাবদ্ধে মারপিটে সাধারণ জখম, হাঁড়ভাঙ্গা গুরুতর জখম ও ভয়ভীতি প্রদানের অপরাধ উল্লেখ আছে, সেই সাথে ১০ লাখ টাকা নিয়ে গেল, যে টাকার জন্য অন্যান্য অপরাধ করেছে দুস্কৃতিকারীরা, এমন ঘটনা কিভাবে চুরি হয় ? এটা কেবল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাই করতে ও মানতে পারে। এভাবে আইনী সুরক্ষার স্থলে দুস্কৃতিকারীদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার মত অপরাধ কর্মকাণ্ডে যে বা যারাই জড়িত থাক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। না হলে কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তার জন্য সকল পুলিশের সুনাম ক্ষুন্ন হয়।
উপদেষ্টা সম্পাদক: আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক,মেয়র, খুলনা সিটি কর্পোরেশন। সম্পাদক: মো: মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ। আইটি ইনচার্জ : মোঃ নাঈমুজ্জামান শরীফ । প্রকাশনা, বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ: "জাহান মঞ্জিল" ৪০, সিমেট্টি রোড (বেণী বাবু রোড), ফুলমার্কেট, খুলনা। dailydeshsanjog@gmail.com, sohagkhulna@gmail.com, online.deshsanjog.news@gmail.com যোগাযোগ করুন: info@deshsanjog.com</p>
দৈনিক দেশ সংযোগ