• E-paper
  • English Version
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন

×

কুরআন সুন্নাহর আলোকে এতিমের অধিকার  (১ম পর্ব)

  • প্রকাশিত সময় : বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০২৪
  • ৩৭ পড়েছেন
প্রতিকী ছবি
মাওঃ মুহাঃ ফজলুর রহমানঃ
এতিম শব্দের অর্থ হচ্ছে নিঃসঙ্গ।ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায়, যে শিশুর পিতা ইন্তেকাল করেছেন, শুধু তাকে এতিম বলা হয়। পিতা উপস্থিত থাকা অবস্থায় মাতাবিহীন শিশুকে ইসলামী পরিভাষায় এতিম বলা হয় না। কেননা সন্তানের লালন-পালন, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব পিতার। তাই শিশুকে তখনই নিঃস্ব ও নিঃসঙ্গ ধরা হবে, যখন পিতা থাকবে না।মাতার অবর্তমানেও এই দায়িত্বভার পিতার ওপর অর্পিত। তাই মাতাবিহীন শিশু নিঃস্ব ও নিঃসঙ্গ নয়। আর সন্তান যখন বালেগ হয়ে যায়, তখন তাকে এতিম বলা হয় না। কেননা সে তখন স্বনির্ভর। এতিমের দায়িত্ব গ্রহণের মর্যাদা ও নির্দেশনা সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে অনেক আয়াত রয়েছে। এক আয়াতে এসেছে, ‘তারা তোমাকে এতিম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, তাদের ইসলাহ তথা সুব্যবস্থা (পুনর্বাসন) করা উত্তম…।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২২০)অর্থাৎ আপনি যদি তাদের উন্নয়নে কল্যাণমূলক কিছু করতে চান, তাহলে তাদের ইসলাহ তথা সার্বিক দেখভালের সুব্যবস্থা করুন। যারা এতিমের প্রতি অবিচার করে, আল্লাহ তাআলা তাদের ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘অসম্ভব, (কখনোই নয়) বরং তোমরা এতিমের সম্মান রক্ষা করো না।’ (সুরা : ফজর, আয়াত : ১৭)মক্কার কুরাইশরা এতিমদের ওপর জুলুম-নির্যাতন করত। বাবা মারা গেলে চাচা এসে ভাতিজার সমুদয় সম্পদ আত্মসাৎ করে নিজ উদরে হজম করে ফেলত। আল্লাহ তাআলা তাদের এই মন্দ কর্ম নিষিদ্ধ করেন।
এতিম ও অনাথকে ধমক দেওয়াও ইসলামে নিষিদ্ধ। ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি এতিমের প্রতি কঠোর হয়ো না।’ (সুরা : দুহা, আয়াত : ৯),এতিমদের প্রতিপালন, তাদের পুনর্বাসন ইত্যাদি হতে হবে নিঃস্বার্থ। ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা আহার্যের প্রতি আসক্তি সত্ত্বেও (আল্লাহর ভালোবাসায়) অভাবী, এতিম ও বন্দিকে আহার্য দান করে। (এবং তারা বলে) শুধু আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই তোমাদের আহার্য দান করি। বিনিময়ে তোমাদের থেকে কোনো প্রতিদান চাই না।’ (সুরা : দাহর, আয়াত : ৮-৯) হাদীসে এসেছে,সাহল বিন সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি ও এতিম প্রতিপালনকারী জান্নাতে এভাবে থাকব (তিনি তর্জনী ও মধ্য অঙ্গুলি দিয়ে ইঙ্গিত করেন। এবং এ দুটির মধ্যে তিনি সামান্য ফাঁক করেন)।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৩০৪),এতিমের মর্যাদা সম্পর্কে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন—বিধবা, এতিম ও গরিবের সাহায্যকারী ব্যক্তি আল্লাহর পথে মুজাহিদের সমতুল্য। অথবা তার মর্যাদা সেই (নামাজের জন্য) রাত জাগরণকারীর মতো, যে কখনো ক্লান্ত হয় না। অথবা তার মর্যাদা সেই রোজাদারের মতো, যে কখনো ইফতার (রোজা ভঙ্গ) করে না। (মুসলিম, হাদিস : ৫২৯৫),ইসলামের দৃষ্টিতে এতিমের প্রতিপালন জান্নাতে যাওয়ার উপায়। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো এতিমকে আপন মাতা-পিতার সঙ্গে নিজেদের (পারিবারিক) খাবারের আয়োজনে বসায় এবং (তাকে এই পরিমাণ আহার্য দান করে যে) সে পরিতৃপ্ত হয়ে আহার করে, তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৮২৫২) আল্লাহ তায়ালা সকলকে এতিমের অধিকার রক্ষার তাওফীক দান করুন,আমীন। সহকারী প্রধান শিক্ষক,পশ্চিম বানিয়াখামার দারুল কুরআন বহুমুখী মাদ্রাসা,খুলনা।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA