বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটের রামপালের ভোজপাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরফদার মাহাফুজুল হক টুকু'র বিরুদ্ধে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত পানির ট্যাঙ্কি বিতরণে অনিয়ম ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপকারভোগীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা দ্বায়ীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে উপকারভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সর্বশেষ উপজেলার ভোজপাতিয়া ইউনিয়নের ৯ টি ওয়ার্ডের ৭৩ জন উপকারভোগীকে নির্ধারিত মূলে পানির ট্যাঙ্কি বরাদ্দ দেওয়া হয়। সরকারিভাবে ১৫ শত টাকা জমা নিয়ে ট্যাঙ্কি দেওয়ার কথা। কিন্তু ভোজপাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান তরফদার মাহাফুজুল হক টুকু ১৫ শত টাকার পরিবর্তে ৩ হাজার টাকা নিয়েছেন। ওই ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের উপকারভোগী মো. হাবিব শেখ, আ. জব্বার, কুলসুম বিবি জানান, তারা ট্যাঙ্কি প্রতি চেয়ারম্যানকে ৩ হাজার করে টাকা দিয়েছেন।
৯নং ওয়ার্ডের মনোসিৎ মন্ডল, অলোক কুমার মন্ডলসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, ইউপি সদস্য অলোক মন্ডলকে ৩ হাজার টাকা করে প্রদানের মাধ্যমে তারা পানির ট্যাংকি পেয়েছে। একইভাবে অন্যান্য ওয়ার্ডের মতলেব শেখ, আ. কাদের শেখ জানান, তারাও ৩ হাজার করে টাকা দিয়েছেন।
সূত্র জানায়, ওই চেয়ারম্যান ৭৩ টি ট্যাঙ্কির বিপরীতে লক্ষাধিক টাকা অতিরিক্তভাবে নিয়েছেন। এ ছাড়াও ট্যাঙ্কি বিতরণে স্বজনপ্রীতি ও একই বাড়ীতে একাধিক ট্যাঙ্কি দিয়েছেন এবং অবস্থাসম্পন্ন ব্যাক্তিদের ও ট্যাঙ্কি দিয়েছেন। খোজ নিয়ে জানা যায়, ২ নং ওয়ার্ডের জলিল তরফদারের ছেলে রিপন তরফদার, মো. রুহুল আমিন তরফদার, মো. শফিকুল তরফদার, ৪নং ওয়ার্ডের হাজি ইমদাদুল হক হাওলাদারের ছেলে মো. তারিকুল ইসলাম সবুজ, ৬ নং ওয়ার্ডের আলহাজ্ব জুলফিকার আলীর দুই ছেলে জাহিদুল ইসলাম ও জাকারিয়া ইসলামকে ট্যাঙ্কি দেয়া হয়েছে। যাদের সবাই অবস্থাসম্পন্ন। হতদরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পরিবারের সদস্যদের বাদ দিয়ে পানির ট্যাঙ্কি দেওয়ায় ইউনিয়ন জুড়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ভোজপাতিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নূরুল আমীন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিগত সময় এমপি'র কোটার বরাদ্দকৃত প্রচুর ট্যাঙ্কি বিতরণ করেছি। কোন দিন কারো কাছ থেকে অতিরিক্ত কোন টাকা নেওয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, যাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ তাদের বাদ দিয়ে যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো তাদেরকে ট্যাঙ্কি দেওয়া হয়েছে। তিনি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদন্ত দাবি করেন।
অভিযোগের বিষয়ে ভোজপাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরফদার মাহাফুজুল হক টুকু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ছড়াচ্ছে। তিনি জানান, আমি টেঙ্কি প্রতি ২ হাজার টাকা নিয়ে সকল উপকারভোগীদের বাড়িতে পৌছে দিয়েছি। আমি অতিরিক্ত কোন টাকা নেওয়া হয়নি। কেউ আমার নামে অতিরিক্ত একটা টাকাও নেওয়ার প্রমান দিতে পারবে না।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর সহকারী প্রকৌশলী মো. ইমরান হোসেন বলেন, সরকার নির্ধারিত ১৫ শত টাকার বেশী অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। কেউ অতিরিক্ত টাকা নিলে তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা জানান, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে রামপাল উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেখ মোয়াজ্জেম হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের নির্ধারিত ফি'র অতিরিক্ত টাকা কেউ নিলে যদি প্রমাণ পাওয়া যায় তবে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
উপদেষ্টা সম্পাদক: আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক,মেয়র, খুলনা সিটি কর্পোরেশন। সম্পাদক: মো: মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ। আইটি ইনচার্জ : মোঃ নাঈমুজ্জামান শরীফ । প্রকাশনা, বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ: "জাহান মঞ্জিল" ৪০, সিমেট্টি রোড (বেণী বাবু রোড), ফুলমার্কেট, খুলনা। dailydeshsanjog@gmail.com, sohagkhulna@gmail.com, online.deshsanjog.news@gmail.com যোগাযোগ করুন: info@deshsanjog.com</p>
দৈনিক দেশ সংযোগ