• E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৫ পূর্বাহ্ন

×

শোকাবহ আগস্টের তৃতীয় দিন আজ

  • প্রকাশিত সময় : শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৪
  • ২৬ পড়েছেন

মোঃ জিলহাজ হাওলাদারঃ

আজ শনিবার শোকাবহ আগস্টের তৃতীয় দিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা জাতির জনককে হত্যা করলেও মুছে ফেলতে পারেনি বাঙালীর হৃদয় থেকে। একদল বিপদগামী সেনা কর্মকর্তারা তাকে সপরিবারে হত্যা করে। দেশের বাইরে থাকায় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান। যখন বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে বিদ্রোহের আগুন জ্বলেছে। সেই হাজার বছরের বিদ্রোহের আগুনের সন্নিবেশ ঘটিয়ে জন্মেছিলেন টুঙ্গিপাড়ার খোকা নামের সেই ছেলেটি। যার জন্মদিবসে ধরণীতে সূর্য ছড়িয়েছিল মুক্তির আভা। যার জন্ম মানেই শোষিতের জয়গান আর শোষকের প্রস্থান। বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যে নামের বন্দনা কোনো সীমারেখায় আটকে রাখা যায় না। তিনি জন্মেছিলেন বাঙালির মুক্তির তাগিদেই। বঙ্গবন্ধু মানেই বাঙালি, বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু মানেই বঞ্চিত মানুষের মুক্তির ঠিকানা। কোন শক্তি তাকে দমাতে পারেনি। অথচ মানবতার সেই মুক্তির দূতকেই হারতে হয়েছে স্বজাতির কাছে।

স্বাধীন বাংলায় ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট কাল রাতে। বাঙালির আকাশে সেই যে আঁধার নামল, তা আজও ঘোচেনি। স্বাধীনতার পাঁচ দশকের বাংলাদেশ, তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আজ জাতি এগিয়েছে বহুদূর। এগিয়েছে বিশ্বসভ্যতাও। কিন্তু বাঙালির পূর্ব আকাশে যে সূর্য উদিত হওয়ার ঊষালগ্নেই অস্ত গেল;) বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন সেই অমানিশার ঘোর কাটিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের আলোকবর্তিকা ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্ব জুড়ে, তখন ক্ষণেক্ষণে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আজও তাড়া করছে, বুনছে ষড়যন্ত্রের জাল। বাঙালির মাঝে ফিরে আসে সেই কাল আগস্ট। সেদিন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষ্যান্ত হয়নি একাত্তরের শকুনিরা। ৪৯ বছর পর সেই কাল আগস্টকে সামনে রেখেই সম্প্রতি শিক্ষাঙ্গনে স্বাধীনতা বিরোধী শ্লোগান। একটা অশুভ ইঙ্গিত জানান দেয়। জনককে হারিয়ে জাতি আজও হাতড়ে বেড়ায় সংকটের প্রতিক্ষণে। ৭৫’র ১৫ আগস্ট রক্তের অভিশপ্ত হলিখেলার দিন। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে যখন আলোর নিশানা দেখিয়ে এগিয়ে নিচ্ছিলেন বঙ্গবন্ধু, ঠিক তখনই ‘আগস্ট’ নামের অন্ধকার নেমে আসে। ঘাতকের বুলেট নিভিয়ে দিয়েছে ‘স্বাধীনতার সূর্য’ বঙ্গবন্ধু নামের প্রদীপ। এখানে সূর্য ওঠে প্রতিদিন। নতুনের কেতন উড়িয়ে মানুষ স্বপ্নজয়ের প্রত্যয়ে এগিয়েও চলে নিত্যদিন। তবু সে স্বপ্নে অপূর্ণতা রয়ে যায়। সে অপূর্ণতা যেন শুধুই স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধুকে হারানোর। তাই যেন আগস্টের অশ্রু বয়ে যায় নয়নে নয়নে।

৭৫’র ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া এবং ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নোবেল জয়ী পশ্চিম জার্মানির নেতা উইলি ব্রানডিট বলেছিলেন, ‘মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে তারা যেকোনো জঘন্য কাজ করতে পারে।’ ভারত বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক নীরদ সি চৌধুরী বাঙালিদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছিলেন, ‘বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানুষের কাছে নিজেদের আত্মঘাতী চরিত্রই তুলে ধরা হয়েছে।’ দ্য টাইমস অব লন্ডন-এর ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট সংখ্যায় বলা হয় ‘সবকিছু সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকে সবসময় স্মরণ করা হবে। কারণ তাকে ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তব কোনো অস্তিত্ব নেই।

খুলনা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এম.এ. নাসিম বলেন, ‘দেশের মানুষ এখন অনুধাবন করতে পারে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নস্যাৎ করে দেশে পাকিস্তানি ভাবধারা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল।’ এ জঘন্যতম হত্যার বিচার দীর্ঘদিন পরে হলেও,‘বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচারের রায় কার্যকর করে জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। একইভাবে বাঙালির আত্মঘাতী চরিত্রের অপবাদেরও অবসান ঘটেছে।

প্রতিবারের মতো এবারও ১৫ আগস্টকে সামনে রেখে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিতরা গভীর ষড়যন্ত্র করছে। শোকাবহ আগস্টের শোককে শক্তিতে পরিণত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলায় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA