ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
আওয়ামী সরকার পতনের পর মুখ খুলতে শুরু করেছে ঝিনাইদহের নিযার্তিত সাধারণ মানুষ। নিপীড়ন, নির্যাতন এতদিন মুখ বুজে সহ্য করলেও ছাত্র—জনতার আন্দোলনে দেশে সু—শাসন ফিরে আসায় এখন বিচারের দাবীতে মুখ খুলতে শুরু করেছে বছরের পর বছর নির্যাতিতরা। দিনের পর দিন মারধর, নির্যাতন, জমি দখল করে নিলেও তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেনি জীবন শংকায়।এমনি এক বাহিনীর খোজ মিলেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পদ্মাকর ইউনিয়নের হাটগোপালপুরে। ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ নিজামুল গণি লিটুর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ১০ জনের একটি বাহিনী। ওই এলাকায় নিরব চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যেত লিটু বাহিনী।
হাটগোপালপুরের ভুক্তভোগী এক নারী জানান, সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ নিজামুল গণি লিটু তার ২০১ শতক জমি মাত্র ৩ লাখ টাকা দিয়ে জোরপুর্বক রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে। যার মুল্যে প্রায় কোটি টাকা। বাড়িতে গিয়ে হত্যার ভয়ভীতি দেখিয়ে নামমাত্র মুল্য দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করার পর আমাকে বিতাড়িত করে ওই এলাকা থেকে। তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০১ শতক জমি নিয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি। হাটগোপালপুর খাদ্য গুদামের সাথে মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ১৬ শতক জমি ছিলো আমাদের। যার মুল্য কমপক্ষে এক কোটি টাকা। সেই জমিও দখল করার চেষ্টা করে। আমরা বুঝতে পেরে ক্রেতা ঠিক করলে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। প্রায় কোটি টাকার জমি মাত্র ১০ লাখ টাকা দিয়ে জোরপুর্বক রেজিস্ট্রি করে আমাদের ওই এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়। আমাদের বাড়ির ৪২ শতক জমি এখনও তার লোকজন দখল করে রেখেছে। আমি এই ভুমিদস্যু ও তার গুন্ডা বাহিনীর বিচার দাবী করছি।এলাকাবাসী জানায়, ২০০০ সালের পর সৈয়দ নিজামুল গণি লিটু ঝিনাইদহ সেটেলমেন্ট অফিসে দালালী করত। সেই থেকে মানুষের সাথে প্রতারণা শুরু করে সে। টাকার বিনিময়ে ভুয়া দলিল বানিয়ে, জাল কাগজ করে জমি রেকর্ড করে নিতো। পরে রাজনীতিতে ঢুকে চেয়ারম্যান হওয়ার পর যেন তার অত্যাচার বেড়ে যায়।খেঁাজ নিয়ে জানা যায়, হাটগোপালপুর দক্ষিণপাড়ার প্যারোট বিশ্বাস, খোকন বিশ্বাস, নান্নু বিশ্বাস, বাপ্পী বিশ্বাস, সাগর বিশ্বাস, সৌরভ বিশ্বাস, সজল বিশ্বাসসহ আরও কয়েকজন মিলে লিটু বাহিনী গড়ে উঠেছিলো। এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে দিনের পর দিন চাঁদাবাজি করে আসছিলো তারা। মানুষের জমি জোরদখল, লুটপাট করত এই বাহিনী। তাদের অত্যাচারে বাড়ীছাড়া ওই এলাকার অনেক পরিবার।
এদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে থানায় একাধিক জিডি, অভিযোগ করলেও অদৃশ্য কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উপায় না পেয়ে বাড়ি ছেড়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় চলে যেতে হয়েছে ভুক্তভোগীদের।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক ব্যবসায়ী বলেন, লিটু যখন চেয়ারম্যান ছিলো তখন পদ্মাকর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে নানা অপকর্ম চালিয়েছে। তার গুন্ডাবাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। ছাত্র—জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর গাঢাকা দিয়েছে ওইসব গুন্ডাবাহিনী। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে ভুক্তভোগীদের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার করার দাবী স্থানীয় সচেতন মহলের।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সৈয়দ নিজামুল গণি লিটু বলেন, আমি যখন চেয়ারম্যান ছিলাম তখন সততার সাথে দ্বায়িত্ব পালন করেছি। দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তণ হওয়ার পর এখন লোকজন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছে।
উপদেষ্টা সম্পাদক: আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক,মেয়র, খুলনা সিটি কর্পোরেশন। সম্পাদক: মো: মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ। আইটি ইনচার্জ : মোঃ নাঈমুজ্জামান শরীফ । প্রকাশনা, বার্তা ও বাণিজ্যিক বিভাগ: "জাহান মঞ্জিল" ৪০, সিমেট্টি রোড (বেণী বাবু রোড), ফুলমার্কেট, খুলনা। dailydeshsanjog@gmail.com, sohagkhulna@gmail.com, online.deshsanjog.news@gmail.com যোগাযোগ করুন: info@deshsanjog.com</p>
দৈনিক দেশ সংযোগ