কয়রা,প্রতিবেদক:
কয়রায় পুড়িয়ে মারার ভয় দেখালে পদত্যাগে বাধ্য হন উপজেলার ২ নম্বর বাগালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ গাজি এবং উত্তর বেদকাশি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার নূরুল ইসলাম কোম্পানি।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে এলাকার কতিপয় মানুুষ চেয়ারম্যানদ্বয়কে পদত্যাগে বাধ্য করায়। জানা যায়, বাগালী ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদকে নিজ কার্যালয়ে পেয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনগণ। জনগণের তোপের মুখে পড়ে প্রথমে তিনি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে দেন। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর পদত্যাগপত্রের একটি কপি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।ইতিমধ্যে জোর করে পদত্যাগ করাতে বাধ্য করার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী ফেসবুকে তার টাইমলাইনে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানোর বিষয়ে একটি লেখা শেয়ার করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যামে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়,বাগালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী ইউনিয়ন পরিষদের কার্যলয়ে তার অফিস রুমের একটি চেয়ারে বসে আসেন।এবং একদল বিক্ষুব্ধ জনতা তার চারিপাশে অবস্থান করছেন।বিক্ষুব্ধ জনতা চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে বলছে, আপনি এখানে পদত্যাগ করবেন, না টিএনও অফিসে পদত্যাগ করবেন? এসময় চেয়ারম্যান বলেন আমি টিএনও’র কাছে না শুনে কিভাবে পদত্যাগ করি।আমাকে একটু সময় দাও।
এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা জোরেশোরে বলতে থাকে, আপনি যে সময় ভোট করেছিলেন সে সময় কি টিএনও’র কাছে শুনে ছিলেন।এখন কিছু বুঝতে পারছেন না? পদত্যাগ করেন, সহজে যা হয় তাই করেন। নৌকা নিয়ে ভোট চুরি করে চেয়ারম্যান হয়েছেন। জনগণের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে পানির ট্যাংক বিতারণ করেছেন। তখন কিছুই বুঝেন নাই।তারপর চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদকে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে দেখা গেছে এবং বলতে শোনা গেছে তোমরা পদত্যাগের বিষয়ে কি হবে তা লিখে নিও। সাদা কাগজে স্বাক্ষরের পর চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী তার ফেসবুক টাইমলাইনে একটি লেখা শেয়ার করেন। বাগালী ইউনিয়নের ইউপি সচিব ইকবল হোসেন কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, সকালে আমরা দাপ্তরিক কাজ করছিলাম।এমন সময় শতাধিক বিক্ষিপ্ত জনতা চেয়ারম্যানকে ঘিরে ধরে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে নিয়ে গেছে। চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ গাজী বলেন, আমি সকাল ১০ টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদে যেয়ে জন্ম নিবন্ধন ও ওয়ারেশকাম সার্টিফিকেটে স্বাক্ষরের কাজ করছিলাম। ১১ টার দিকে শতাধিক লোক এসে জোরপূর্বক পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি রাজি হইনি। স্বাক্ষর না করলে কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম মহসিন রেজার মতো আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেয় তারা।
পরে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করে নেয়। কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলি বিশ্বাস বলেন, বাগালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট থেকে সরাসরি পদত্যাগপত্র পাইনি। যে কোন মাধ্যমে আমার কাছে পদত্যাগের কপি পাঠানো হয়েছে। চেয়ারম্যান স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন কিনা জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।