• E-paper
  • English Version
  • মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন

×

ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধ জোড়া লাগিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি চরম দুর্ভোগে মানুষ

  • প্রকাশিত সময় : শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪
  • ২১ পড়েছেন
দেশ প্রতিবেদকঃ
খুলনায় ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ মেরামত করলেও ভদ্রা নদীর জোয়ারের পানির তোড়ে আবারো ভেঙে গেছে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এর আগে এলাকার শত শত মানুষ বাঁশ, চাটাই, বস্তা, বালুসহ বিভিন্ন জিনিস নিয়ে বাঁধ আটকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ভদ্রা নদীর জোয়ারের পানির তোড়ে আবারো ভেঙে পানি আগের মতোই লোকালয়ে প্রবেশ করে। বৃহস্পতিবার রাতেও স্কেভেটর দিয়ে মাটি কেটে বাঁধ জোড়া লাগানো চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)।
স্থানীয়রা জানায়, গত বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ভদ্রা নদীর জোয়ারের অতিরিক্ত পানির চাপে পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের ২২নম্বর পোল্ডারের কালিনগর বাওয়ালি বাড়ির দক্ষিণ পাশে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৩০০ ফুটের বেশি এলাকা জুড়ে ওয়াপদার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। তখন থেকেই প্রবল বেগে পানি ঢুকে লোকালয় প্লাবিত হয়। এলাকাবাসী বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করেও পানির প্রবল তোড়ের কারণে বাঁধ মেরামত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ভুক্তভোগী কালিনগর গ্রামের হরষিত ম-ল বলেন, বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করে কালিনগর, গোপী পাগলা, তেলিখালী, সৈয়দখালী, খেজুরতলা, সেনের বেড়, হাটবাড়ি, ফুলবাড়ি, বাগীরদানা, দুর্গাপুর, দারুল মল্লিক, হাবিখোলা ও নোয়াইসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।  মানুষ যে কী দুর্ভোগে আছে- তা বর্ণনা করে বোঝানো যাবে না।
আরেক ভুক্তভোগী আলম ব্যাপারী বলেন, পানিতে সদ্য রোপণকৃত ধান ও বীজতলাসহ সব কিছু তলিয়ে গেছে। কোথাও কোনো খাবার পানি নেই। অনেকের ঘরে খাবার পর্যন্ত নেই। সবকিছু ভেসে গেছে। বাথরুম-পায়খানা তলিয়ে আছে। রাতে যে কীভাবে মানুষ থাকবে- অনেকে তারও কোনো বন্ধবস্ত করতে পারেনি।
দেলুটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিপন কুমার ম-ল জানান, বেড়িবাঁধের ঐ স্থানে আগে থেকেই নাজুক ছিল।  বিষয়টি বার বার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারাদের বলা হয়েছিলে। কিন্তু তারা কর্ণপাত করেননি। যার ফলে এখন ৫টি ওয়ার্ডের ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এলাকায় কোনো আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় মানুষ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, কালীনগর কলেজ, দারুণ মল্লিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাটবাটি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয় একং ফুলবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু যত মানুষ পানিবন্দি তার থেকে সামান্য মানুষের সেখানে আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ হয়েছে। বাকিরা আছে চরম দুর্ভোগে।
পাইকগাছার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, পানিতে ৪০০ ফুট বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। এতে প্রায় ৩ হাজার ২০০ পরিবারের ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে। একই সঙ্গে চিড়া, মুড়ি, গুড়সহ বিভিন্ন শুকনা খাবার দেওয়া হচ্ছে।
খুলনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, অতিরিক্তি পানির চাপে বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। বাঁধ ভাঙ্গার পরই গত রাতে (বৃহস্পতিবার) এবং আজ (শুক্রবার) সকালে দুইটি স্কেভেটর দিয়ে এলাকার মানুষের সহায়তায় বাঁশ, চাটাই, ব্যাগ, বালু ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে বাঁধ আটকানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু বাঁধ টেকেনি। তাই পরবর্তী ভাটার সময় আবার বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করা হবে।  এর জন্য সমস্ত মালামাল প্রস্তুত আছে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA