• E-paper
  • English Version
  • মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:১৫ পূর্বাহ্ন

×

আপডেটঃ গাছ চুরি তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় থানায় মামলা,গোপন আঁতাতে মামলা ধামাচাপা

  • প্রকাশিত সময় : সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪
  • ২৮ পড়েছেন
সৈয়দ আবুল কাসেম দিঘলিয়াঃ
দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট সরকারি রাস্তার গাছ ঠিকাদার টেন্ডারের আড়ালে জ্যান্ত গাছ কেটে চুরি ঘটনা তদন্ত কমিটির তদন্তে সত্যতা প্রমাণিত ও দিঘলিয়া থানায় জনৈক যুবলীগ নেতাকে আসামী করে মামলা দায়ের হয়। কিন্তু মামলা দায়েরের পর খুলনা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী এর নির্দেশে দিঘলিয়া থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ রিপন কুমার বিশ্বাস, মামলার আসামী ও দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলামের মধ্যে গোপন আঁতাতে মামলার মিথ্যা তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করে মামলাটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রমাণ পত্র জমা দিয়ে মামলার আসামী হাবিবুর রহমান তারেককে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
কিন্তু সরকারিভাবে ও বেসরকারিভাবে ২ টা তদন্তে গাছ চুরির সত্যতা প্রমাণিত হয়। তদন্ত রিপোর্টের আলোকে উপজেলা পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক দিঘলিয়া থানায় সরকারি গাছ চুরির মামলা দায়ের হয়। যিনি তদন্ত করিয়ে উপজেলা পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত নিয়ে সকল তথ্য যাচাই করে মামলা করা হয়। আবার তিনিই খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদীর নির্দেশনা মোতাবেক আঁতাত করলেন। সরকারি সম্পদ বিনষ্ট হলো। তদন্তে অর্থ ব্যয় হলো ও শ্রম গেল। গাছ চুরি মামলাটির পুণরুদ্ধার চায় এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে আশু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। আর কোনো আঁতাত নয় সরকারি সম্পদ রক্ষায়। এ ঘটনার আসল রহস্য দিঘলিয়াবাসী জানতে চায়।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট ইউনিয়নের মাঝিরগাতী হতে সোনাকুড় সড়কের পার্শ্বে অবস্থিত ৩৩৭ টি মরা ও শুকনা শিশু গাছ প্রকাশ্যে নিলাম হয়। সে মোতাবেক এসএম হাবিবুর রহমান তারেক নামের জনৈক ব্যক্তি ২ লাখ ৬৬ হাজার টাকা সর্বোচ্চ দরদাতা হওয়ায় তাকে ৫ এপ্রিল থেকে ৫ মে /২০২২ তারিখের মধ্যে উক্ত মরা ও শুকনা শিশু গাছ কর্তনের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। অভিযোগ রয়েছে উক্ত ঠিকাদার নির্ধারিত মরা ও শুকনা শিশু গাছের পাশাপাশি আরো শতাধিক মূল্যবান গাছ কর্তন করে নিয়ে যায়। যার মূল্য কয়েক লাখ টাকা। এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে অতিরিক্ত গাছ কর্তনে বাঁধা দিলে ঠিকাদার এসএম হাবিবুর রহমান তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি ধামকি প্রদান করেন।
অবশেষে এলাকাবাসী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন। স্থানীয় ও জাতীয় পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরিবেশবাদী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন অবৈধভাবে গাছ কর্তনের প্রতিবাদে উপজেলা সদরে মানববন্ধন করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ মে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ আলীমুজ্জামান মিলনকে আহবায়ক ও উপজেলা প্রকৌশলী আবু তারেক সাইফুল কামাল এবং উপজেলা বন কর্মকর্তা সৈয়দ আবুল বাশারকে সদস্য করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে কমিটির আহবায়কসহ অন্য দু’জন সদস্য ১৭ মে /২০২২ইং তারিখ স্থানীয় ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বেলা ৩ টা থেকে ৬ টা পর্যন্ত সরেজমিনে মাঝিরগাতী হতে সোনাকুড় সড়কের দু’পার্শ্বের কর্তনকৃত গাছের সংখ্যা (গাছের গোড়া) গণনা করা হয়। তদন্তে নিলাম ক্রয়ের কার্যাদেশে উল্লেখিত ৩৩৭টি গাছের পরিবর্তে ৪৬৫ টি গাছ কর্তনের নমুনা পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এসএম হাবিবুর রহমান তারেক তদন্ত কমিটির কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন তিনি টেণ্ডারে উল্লেখিত গাছ ছাড়া অতিরিক্ত কোন গাছ কর্তন করেন নি। অন্যদিকে ঠিকাদার এসএম হাবিবুর রহমান দিঘলিয়া উপজেলা যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য হওয়ায় দিঘলিয়া উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের পক্ষ থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
অপর দিকে দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর তিনি উপজেলা পরিষদের মিটিং করেন। উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্ত ও বিধি মোতাবেক সরকারি সকল কার্যক্রম সম্পন্নকরণ পূর্বক দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দিঘলিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় দেয়াড়া নিবাসী শেখ জামাল হোসেনের পুত্র হাবিবুর রহমান তারেককে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ১১ তারিখ ১৪/০৬/২০২২ইং। ধারা ৩৭৯ ও ৪১১। উল্লেখ্য উক্ত সরকারি গাছ কর্তন ও চুরির ব্যাপারে দিঘলিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন পূর্বক সরেজমিনে তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর একটি মহল সরকারি তদন্তকে মিথ্যা ও প্রশ্ন বিদ্ধ করার জন্য নানা অনিয়ম ও অপতৎপরতা চালায়।
যারা সরকারি গাছ চুরির সাথে অন্য যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ও যারা সরকারি তদন্তকে মিথ্যা ও প্রশ্ন বিদ্ধ করার মানসে নানা অনিয়ম ও অপতৎপরতা চালিয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে তাদেরকেও আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী ওঠে এলাকার বিজ্ঞমহলের পক্ষ থেকে। এ ব্যাপারে দিঘলিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আহসান উল্লাহ চৌধুরী এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এদিকে এ গাছ কাটা ও চুরির সাথে যারা জড়িত ও সরকারি তদন্ত কাজ তদন্ত রিপোর্ট মিথ্যা ও প্রশ্নবিদ্ধ করার মানসে যারা অপতৎপরতা চালিয়েছে তারাও আইনের আওতায় আসতে পারে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন বিজ্ঞমহল।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA