• E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৩ অপরাহ্ন

×

কোটচাঁদপুরে খেজুর রস আহরণে গাছ প্রস্তুতে ব্যস্ত গাছিরা

  • প্রকাশিত সময় : শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১১ পড়েছেন

কোটচাঁদপুর সংবাদদাতা ঃ

দুয়ারে কড়া নাড়ছে মিষ্টি মিষ্টি শীত। এরই মধ্যে কোটচাঁদপুর উপজেলায় গাছিদের মধ্যে শুরু হয়েছে খেঁজুর রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতের তোড়জোড়। এখনও শীত জেঁকে না বসলেও উপজেলার সবখানে খেঁজুর গাছ প্রস্তুত করা হচ্ছে।

মাঠের আইলে, রাস্তার পাশে, পুকুরপাড়ে অযত্নে বেড়ে ওঠা খেঁজুর গাছ থেকে শীত মৌসুমে উপজেলার কয়েক হাজার গাছি রস-গুড় উৎপাদন করে। এতে তারা যে অর্থ উপার্জন করে তাতে তাদের বছরের কয়েক মাসের  জন্য জীবিকার ব্যবস্থা হয়।

তবে অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন ইটভাটায় খেজুর গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার কারণে খেঁজুর গাছ কমে গেছে। আগে  উপজেলার সাফদারপুর, দৌড়া, কুশনা, বলুহর ও এলাঙ্গি ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি ঘরে রস-গুড় উৎপাদন হতো, এখন কৃষক খেঁজুর রস উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। অধিক পরিশ্রম আর জ্বালানি স্বল্পতায় নতুন প্রজন্মের কৃষকের মধ্যে রস-গুড় উৎপাদনে তেমন আগ্রহ নেই। এর ফলে খেঁজুর গাছ থাকলেও গাছির সংকটে অনেকে গু উৎপাদন ছেড়ে দিয়েছেন।

বর্ষার শেষের দিকে শীত আসার আগমনে গাছিরা প্রস্তুতি নেন। প্রথমে খেঁজুর গাছের উপরিভাগের পাতা সহ ডাটা কেটে তিন থেকে চার দিন রাখা হয়। তারপর উক্ত জায়গায় চাচ দেওয়া হয় ধারালো দা দিয়ে। এরপর ১ সপ্তাহ পরে বাসের তৈরি নলী ও গোজ মারা হয়। গোজ মারা হয় ভাড় টাঙ্গানোর জন্য আর নলি দিয়ে রস নামে ভাঁড়ের ভিতর। গাছ এমনভাবে প্রস্তুত করা হয়, যেন প্রস্তুত অংশে সূর্যের আলোটা সরাসরি পড়ে।

 উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের গাছি নবী উদ্দীন জানান, শীতকালে আগে শহর থেকে মানুষ দলে দলে আসতো খেজুর রস খেতে। সন্ধ্যায় গ্রামীণ পরিবেশ খেঁজুর রস কেন্দ্র করে জমে উঠতো আনন্দঘন পরিবেশ। রস আহরণকারী গাছিদের প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যেত সেই সময়ে। এখন আর তেমন লক্ষ্য করা যায় না। তবে খেঁজুরের গুড়ের চাহিদা রয়েছে অনেক। দামও ভালো পাওয়া যায়।

একই এলাকার হায়দার আলী জানান, তিনি এবার ১০০ খেঁজুর গাছ প্রস্তুত করেছেন রস নেওয়ার জন্য। দুই-তিন মাসের রস-গুড় বিক্রির অর্থ দিয়ে তার বছরের ৫/৬ মাস সংসার চলে।

তিনি আরও জানান, খেঁজুর গাছ প্রস্তুত করার পর খেঁজুরের যে পাতা পেয়েছেন, সেগুলো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করেন।

কোটচাঁদপুর উপজেলার ছয়খাদা গ্রামের গাছি নূর মোহাম্মদ জানান, আমি এবার খেজুর রস আহরণের জন্য ১২০টি গাছ প্রস্তুত করেছি। তবে বর্তমানে যে হারে খেঁজুর গাছ হারিয়ে যাচ্ছে, তাতে এক সময় হয়তো এলাকায় খেজুর গাছ দেখা যাবে না। এলাকার ঐতিহ্য ধরে রাখতে চাইলে কৃষকের বেশি করে খেঁজুর গাছ লাগানো এবং তা পরিচর্যা করা দরকার বলে তিনি মনে করেন।

কোটচাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের  উপপরিচালক কৃষিবিদ রাজিবুল হাসান বলেন, কৃষি অফিস থেকে গাছিদের মাঠপর্যায়ে খেঁজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও ভালোমানের লালি বা গুড় উৎপাদনের বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বেশি বেশি খেঁজুর গাছ রোপণ করলে এর চাষ বাড়ানো সম্ভব। একই সঙ্গে গাছিদের প্রশিক্ষণ ও স্বল্পসুদে ঋণ সহায়তা দিয়ে রস আহরণে উৎসাহিত করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA