মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন
ছবি : পুলিশ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম।
স্ত্রীর দায়েরকৃত যৌতুক ও নির্যাতনের মামলায় স্বামী পুলিশ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের জামিন বাতিল করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। রোববার (৩ এপ্রিল) সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জি আজম এ আদেশ দেন। বিশ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী তানিয়া আফরিনকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় এ মামলা দায়ের করা হয়।
সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালেল বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু পুলিশ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের জামিন আবেদন নাকচ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসামী রফিকুল ইসলাম ঝিনাইদহ জেলা সদরের হলিধানী প্রতাপপুর গ্রামের মৃত আফছার আলীর ছেলে ও বরগুনা জেলার তালতলি থানা পুলিশের ওসি-তদন্ত।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব নারায়নপুর গ্রামের ঠিকাদার মৃত আব্দুল মজিদের মেয়ে তানিয়া আফরিনের সাথে ২০১৩ সালের ২২ মার্চ কালিগঞ্জ থানায় উপ-পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিন লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে হয় ঝিনাইদহ সদরের হলিধানী গ্রামের রফিকুল ইসলামের। বিয়ে আগে ৫ লাখ ও বিয়ের পর ১৩ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে নেয় রফিকুল। এরপরও ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে ঢাকার উত্তরার বাসা থেকে মারপিট করে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর তাড়িয়ে দেয় রফিকুল ও তার পরিবারের সদস্যরা। ওই বছরের ২৫ ডিসেম্বর মীমাংসার নামে কালিগঞ্জের পূর্ব নারায়নপুর গ্রামে এসে স্ত্রীকে দোতলায় ডেকে নিয়ে সেখানে কেউ না থাকার সুযোগে মারপিট করে চলে যায় রফিকুল। মারাত্মক জখম অবস্থায় তানিয়াকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি তানিয়া তার স্বামী রফিকুল, শ্বাশুড়ি রাহেলা, দেবর সাইফুল ও সাইফুলের স্ত্রী নাহারের নামে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পিটিশন ২৯/২১ মামলা দায়ের করেন। বিচারক এম জি আজম মামলাটির বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলায় বাদি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাড. আব্দুল মজিদ (২) এর সেরেস্তার অ্যাড. বসির আহম্মেদ। বিচারিক হাকিম ইয়াসমিন নাহার ছয় জনের সাক্ষী গ্রহণ করে রফিকুলের বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতা আছে মর্মে গত বছরের ২২ মার্চ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এমজি আজম আসামী রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
তানিয়া আরেফিনের অভিযোগ, বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. বসির আহম্মেদ হলেও আসামীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে একই সেরেস্তার আব্দুল মজিদ (২) হওয়ায় তিনি অবাক হয়ে যান। কারণ অ্যাড. আব্দুল মজিদের পরামর্শ অনুযায়ি তারই সেরেস্তায় মামলা করা হয়। একপর্যায়ে আসামী মীমাংসার নামে তিন বার জামিন নেন। বিপদ বুঝে তিনি আইনজীবী পরিবর্তন করেন। রোববার আসামীপক্ষের আইনজীবী আদালতে রফিকুলের স্থায়ী জামিনের (না: শিশু ৩৬৪/২১) আবেদন করেন।
এদিকে বাদি পক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু, অ্যাড. এসএম হায়দার, অ্যাড. তপন কুমার দাস আসামীর জামিন বাতিলের আবেদন করেন।
উভয়পক্ষের শুনানী শেষে বিচারক এমজি আজম আসামী রফিকুল ইসলামের জামিন বাতিল করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA