পাইকগাছার এক কলেজ শিক্ষককে ব্লাকমেইল করে হয়রানী চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশ পরিচয়ধারী এক নারীর বিরুদ্ধে। । ভুক্তভোগী কলেজ শিক্ষকের অভিযোগ ঐ নারীর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করছেন। এ নিয়ে একে- অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ করেছেন। তবে গত ক’দিনে ব্যক্তিগত একান্ত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় বিরুপ প্রভাব পড়েছে।
এদিকে কলেজ শিক্ষক মাসুদুর রহমান মন্টু বাদী হয়ে ওই নারী সহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ইতোপুর্বে থানায় জিডিসহ ভিন্ন -ভিন্ন আদালতে মামলা করেছেন। যা চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে পিবিআই একটি মামলার তদন্তও শুরু করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ডুমুরিয়ার সাজিয়াড়া এলাকার মা-মেয়ে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে বিভিন্ন পুরুষকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে আসছে। আঁখি ওরফে লিজা ও শোভা ওরফে জেরিন সম্পর্কে মা- মেয়ে। এ দু নারী সম্পর্কে ক্ষোদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনির কাছে নানা অভিযোগ রয়েছে।
পাইকগাছা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক ও বাতিখালীর বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক অধ্যক্ষ মৃতঃ লুৎফর রহমানের ছেলে ভুক্তভোগী মাসুদুর রহমান মন্টু বলেন, এ বছরের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে শোভা ইসলাম নামে এক নারী আমাকে ফেসবুক থেকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠায়। এক পর্যায়ে তার রিকুয়েস্টটি এক্সসেপ্ট করি। পরিচয়ের সুত্র ধরে সে আমাকে জানাই আমাদের এলাকার গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা জনৈক সেলিম আমার বোন লিজার নিকট থেকে ৮০ হাজার টাকা নিয়েছে।
এ ব্যাপারে লিজাকে সহযোগিতা করতে আমাকে অনুরোধ করে। ৩০ জানুয়ারি শোভা একটি ফোন নাম্বার দেয় লিজা খানের সাথে কথা বলার জন্য। আমি ওই নাম্বরে কথা বললে লিজা খান যশোর কোতয়ালি থানায় এসআই পদে কর্মরত আছে উল্লেখ করে জনৈক সেলিমের বিষয়ে সাহায্য চায়। এক সময় লিজা তার চাকুরিচ্যুতির সমস্যা বলে আমাকে খুলনা কেসিসি মার্কেটে ডেকে নিয়ে যায়। এখানে নিয়ে ফাঁদে ফেলে ১৩/০১/২০২৩ তারিখ দেখিয়ে ১ লক্ষ ১ টাকার একটি এ্যাফিডেফিট করে নেয়। পরে আবার বলে একটি কাবিননামা হলে তার চাকুরি যথাযথভাবে বহাল থাকবে। এ কথা বলে অনেক অনুনয় এবং কান্নাকাটি করলে লিজা খান ওরফে আকলিমা আক্তার আঁখির অনুরোধে আমি ২৯/০৩/২০২৩ তারিখ আবারও খুলনা কেসিসি মার্কেটে যাই। সেখানে গেলে জনৈক আমিনুর রহমানের কম্পিউটার দোকানে ফেলে আমার কাছ থেকে ১ লক্ষ ১ টাকার কাবিননামা করে নেয়। পরে ওই কাবিননামাটি আমার স্বাক্ষর ও ফিঙ্গার প্রিন্ট জাল করে ১০ লক্ষ টাকার বানোয়াট দেনমোহর সৃষ্টি করে।
এরপর আপত্তিকর কিছু ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আমার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। এর পর আমি তার প্রকৃত পরিচয় জানতে পারি। আমি প্রথমে শোভা ইসলামকে বিবাদী করে পাইকগাছা থানায় সাধারণ ডায়েরী করি, যার নং- ৭৮৮, তারিখ ১৬/০৫/২০২৩, লিজা খানের বিরুদ্ধে জিডি নং-৬০১, তারিখ ১২/০৬/২০২৩।
এরপর আকলিমা আক্তার আঁখি, শোভা ইসলাম, কাজী মাওঃ আল আমিন ও মাওঃ ফেরদৌস হোসেনকে আসামী করে অতিরিক্ত মূখ্য মহানগর হাকিমের আমলী আদালত, খুলনা থানা, খুলনায় ৯৫৯/২৩ নং সি,আর মামলা করি। এছাড়া বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত খুলনা সদর, খুলনা আদালতে ৯৬/২০২৩ নং দেওয়ানী ও বিভাগীয় সাইবার ট্রাইবুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরো একটি মামলা করি। বর্তমানে ওই নারী এলাকার বিভিন্ন মানুষের ম্যাসেঞ্জার ও হোয়াটস অ্যাপে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে সামাজিকভাবে হেয় করছে।
এদিকে মন্টুর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলার তথ্য দিয়ে গনমাধ্যমে আকলিমা আক্তার আখির অভিযোগ মন্টু আমাকে বিয়ে করে ছবি ধারণ করে ব্লাক মেইল করে পরে পরবর্তীতে তালাক দিয়ে প্রতারণা করছেন।
সর্বশেষ হয়রানী থেকে রেহাই পেতে ভুক্তভোগী কলেজ শিক্ষক মাসুদুর রহমান মন্টু ও তার পরিবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।