মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ
মোংলার শিল্পাঞ্চলের দিগরাজ বাজার সংলগ্ন নাসির সুপার মার্কেট ও মার্কেট সংলগ্ন দুইটি বাড়ীতে হামলা চালিয়ে নগদ টাকা, স্বর্নলংকার, গুরুত্বপূর্ণ দলিল, মটরসাইকেল ও মালামাল লুটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় ১০জনের নাম উল্লেখসহ আরো ১৫/২০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে। এ মামলার কোন আসামীকে এখনও আটক করতে পারেনি পুলিশ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ৬আগষ্ট সকালে দিগরাজের নাসির সুপার মাকের্টের অফিসে প্রবেশ করে বসে তাদের ব্যবসায়ীক কার্যক্রম শুরু করছিলেন নাসির এন্টার প্রাইজের ক্যাশিয়ার মোঃ সোহেল। এ সময় হঠাৎ দিগরাজ এলাকার বাসিন্দা মোঃ শাহিন শেখ ২৫/৩০জনের একটি সশস্ত্র দল নিয়ে তাদের অফিস রুমে প্রবেশ করে। ক্যাশিয়ার সোহেলকে মারধর ও শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। পরে অফিস কক্ষে থাকা নগদ টাকা, চারটি ব্যাংক একাউন্টের চেক বই, গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট ও দলিলপত্র এবং অফিসের সামনে রাখা একটি মটর সাইকেল নিয়ে যায়। এর আগে অফিস কক্ষের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে সিসি ক্যামেরা খুলে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। এরপর মার্কেট সংলগ্ন দুইটি বাসায় হামলা ও ভাংচুর চালায় তারা। সেখান থেকে স্বর্ণলংকার ও বাসার যাবতীয় মালামাল লুটপাট করে নিয়ে। এ সময় মারধর করা হয় মাকেটের মালিক নাসির হাওলাদারের ছোট ভাই মশিউর ও তার স্ত্রী ও সন্তানদের। এ ঘটনার পর থানায় পুলিশি কার্যক্রম স্বাভাবিক না থাকায় মামলা করতে পারেনি ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। পরে ১৮আগস্ট শাহিন শেখসহ ১০জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ১৫/২০জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে নাসির এন্টারপ্রাইজের কর্মচারী মোঃ সোহেল।
মামলার বাদী সোহেল জানান, হামলা ও লুটপাটকারীরা মার্কেটের মালিক নাসির হাওলাদারকে মেরে ফেলার জন্য খুজতে থাকে। তিনি (নাসির) যেহেতু খুলনায় থাকে তাই তাকে না পেয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়। তিনি দাবী করেন, হামলাকারীরা তাদের প্রায় সাড়ে পঁচিশ লাখ টাকার মালামাট লুট ও ক্ষতি করেছেন।
নাসির সুপার মার্কেটের মালিক নাসির হাওলাদার জানান, তার প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ১৯আগষ্ট সকালে মার্কেটে থাকা তার সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলে এবং তাদের একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়। মার্কেটের ভাড়াটিয়াদের হুমকি ধামকি দিতে শুরু করে। নাসির আরো বলেন, হামলা ও লুটপাটকারীরা তাকে মেরে ফেলতে খোজাখুজি করছে। তাই তিনি প্রাণ বাচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ২০১৩সালের ১০জুন এক একর ৫৪শতক ও ১৯নভেম্বর স্ত্রী আসমার নামে ২৬শতক জমি শাহিন শেখের কাছ থেকে ক্রয় করে মার্কেটটি নির্মাণ করেন নাসির।
মামলার এক নম্বর আসামী ও অভিযুক্ত শাহিন শেখ বলেন, নাসির হাওলাদার তার কাছ থেকে মার্কেটের জমি কিনেছিলেন। পরে সেই জমি তাকে ফেরত দেওয়ার কথা ছিলো। তিনি মার্কেটের মালিক নাসির হাওলাদারের নিকট টাকা পাবেন তাই মার্কেটটি দখলে নিয়েছেন।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, লুটপাট ও হত্যার চেষ্টার ঘটনার অভিযোগ পেয়ে তদন্ত সাপেক্ষে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতাও পাওয়া গেছে। মামলার আসামীদের আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।