স্নেহেন্দু বিকাশঃ
খুলনার পাইকগাছার ৩ দিনেও দেলুটির কালীনগরের নদী ভাঙনে লন্ডভন্ড বেঁড়িবাঁধ আটকানো সম্ভব হয়নি। শনিবার স্থানীয়রা ও বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের পাইলিং দিয়ে ২শ ফুট বিকল্প রিং বাঁধ দিতে সক্ষ্যম হয়। এখনো ১শ ফুট বাঁধ দিলে পোল্ডারে পানি উত্তোলন বন্ধ হতে পারে। তবে দুপুরে জোয়ারের কারণে অবশিষ্ট বাঁধ দেওয়া সম্ভব হয়নি।
দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল জানান, সোলাদানার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এসএম এনামূল হক, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন এলাকার শত-শত মানুষ বাঁধের কাজে সহয়তা করছেন। তিনি আরোও জানান,রবিবার ভাটার সময় অবশিষ্ট বাঁধের কাজ সম্পন্ন হতে পারে। স্থানীয়দের অভিযোগ বাঁধ মেরামতে মাটি কাটা সরঞ্জামের মারাত্মক অভাব রয়েছে। ইতোমধ্যে জোয়ার-ভাটার কারনে ২২ নং পোল্ডারের ১৩ গ্রাম প্লাবিত হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে। কাঁচা ঘরবাড়ি ধ্বংসে পড়ছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। আমন ফসল বিনষ্ট হয়েছে। এদিকে শনিবার সকালে দেলুটির দারুনমল্লিক ঘাটে নৌবাহিনী বহু পরিবারে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেছেন। অন্যদিকে বানভাসি মানুষের কাছে সরকারি ভাবে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সুপেয় পানি ও শুকনো খাবার বিতরন করেছেন। কিন্তু এসব খাদ্য সামগ্রী প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। দুর্গত এলাকায় জরুরি চিকিৎসাটিম পাঠানো হয়েছে।
প্রশাসন স্থানীয়দের সহয়তায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন জানান,দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য প্রশাসন সাধ্যমত সহয়তা করছেন এবং পর্যায়ক্রমে এসব ত্রানসামগ্রী বিতরণ করা হবে।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, দুর্যোগ কবলিত দেলুটিতে ১২ মেঃ টন চাল,বরাদ্দ ও প্রতিদিন খিচুড়ি ও শুকনো খাবার বিতরন করা হচ্ছে।
এদিকে লস্করের আলমতলা নদী ভাঙনে পাউবোর চরম ঝুঁকিতে। যে কোন মুহুর্তে অঘটন ঘটার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এ পরিস্থিতিতে গত ক’দিন ধরে এলাকার লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে ক্ষতিগ্রস্ত বেঁড়িবাঁধে মাটি ও বস্তা ফেলে পোল্ডার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন। শনিবার সকালে সরেজমিনে গেলে শতাধিক মানুষ বাঁধ রক্ষায় আপ্রান চেষ্টা করছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম কাগজী,সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আঃ করিম গাইন,গোলাম সরোয়ার,মাওঃ আমিনুল ইসলাম, মাওঃ আবু সাঈদ,সাদ্দাম হোসেন,শফিকুল ইসলাম,ইকবাল হোসেন কাগজী,সুমন কাগজী,ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম লিটন,হাসানুজ্জামান,সাবেক ইউপি সদস্য হারুন জমাদ্দার,অজোদ্ধা মন্ডল,আলম গাইন,সুভাষ সরদারসহ পানিউন্নয়ন বোর্ডে সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ জাইকার অর্থায়নে আলমতলায় নদী ভাঙন রোধে ৭মিঃ ঝুঁকিপূর্ন বাঁধ মেরামত প্রকল্পের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি হয়নি। এ প্রকল্প নিয়ে পানিউন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদরি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চিঠি চালাচালি চলছে। স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত মজবুত বেঁড়িবাঁধের দাবি করেছেন। স্বীমাবদ্ধতা স্বীকার করে পাওয়ার বিভাগ-২ এর উপসহকারী প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার জানান, ভাঙন রোধে দেলুটি ও আলমতলায় বাঁশ,জিওব্যাগ ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে