• E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৮ অপরাহ্ন

×

আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ অন্ধকার ধোঁয়াশাচ্ছন্ন

  • প্রকাশিত সময় : শুক্রবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৪
  • ৩৮ পড়েছেন
★ আওয়ামী লীগের কর্মীর চেয়ে নেতা বেশি হওয়া
★ দল পূণঃগঠন না করে ব্যাক্তি আধিপত্য রক্ষায় ব্যস্ত থাকা
★ তৃণমূল কর্মীদের অবমূল্যায়ন করা
★ একক ও পরিবারতান্ত্রিক দলে পরিণত করা
★ আদর্শিক নতুন নেতৃত্ব তৈরি না কার
মোঃ জিলহাজ হাওলাদারঃ
আওয়ামী লীগ প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠন হলেও এর পক্ষে বিপক্ষে রয়েছে নানা বিতর্কতা। যদিও কথায় আছে, যে কাজ বেশি করে তার ভূলের ঝুড়ি বেশী ভারী। তথাপিও বিজ্ঞ জনের কাছে প্রত্যাশা বেশি। তাই তাকে থাকতে হয় সবার উদ্ধে। তেমনি এ দলটির কাছে মানুষের প্রত্যাশা বেশী এটাই স্বাভাবিক।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৯৭১সালে দীর্ঘ নয় মাসে লাখো দেশপ্রেমের আত্মবলিদানে বাংলাদেশ নামের স্বাধীন পতাকা আকাশে উড়ে ছিলো। একঝাক আদর্শীক দেশ প্রেমিকের নেতৃত্বের সমন্বয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সাড়ে সাত কোটি মানুষের একত্রিত সমন্বয়ে এ গৌরব অর্জন সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী ৭৫’র পরে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, লতিফ সিদ্দিকী, সোহেল তাজ, ব্যারিষ্টার আমিরুল ইসলাম, তানিয়া আমীর, শাহদিন মালিক, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, মোস্তফা মহসিন মন্টু, ফজলুর রহমান, অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, অধ্যাপক আবু সাঈদ, আবুল আহসান চৌধুরী, হাবিব, মান্না এরা আদর্শিকতার যায়গা থেকে আওয়ামী লীগ করতে পারে নাই। তোফায়েল আহম্মেদ, আব্দুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেন, আব্দুল জলিল, সাবের হোসেন’রা দলে থেকেও ছিলেন নিগৃহীত।
সালমান এফ রহমান, ওবায়দুল কাদের, আরাফাত, দিপু মনি, হাসান, পলকরা সহ সব নেতৃবৃন্দ হয়েছিল আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক। এমনকি শেখ পরিবারের আত্মীয় স্বজন ও কাজের লোকেরাও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক ছিলো। সাম্প্রতি দুই সংসদীয় শাসন আমলে দলে কর্মীর চেয়ে নেতৃত্বের হার বেশী লক্ষণীয়। ক্ষমতার আধিপত্য বিস্তারে মগ্ন ছিল দলটি। উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী দলটার এই যদি হয় হাল তাহলে দলটা কিভাবে ভালো থাকতো?
আ’লীগের নীতিনির্ধারক ও নেতৃত্বে সংস্কার করতে হবে। মূল দল সহ এর সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পুরোনো সেটাপ বাদ দিয়ে তৃণমূলে গ্রহনযোগ্যদের ডেকে দায়িত্ব দিতে হবে। তা না হলে, এই দলের ভবিষ্যত কুয়াশার ধোঁয়াশাচ্ছন্ন। আওয়ামী লীগের কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা দাস নয়। সুবিধাভোগীদের চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত মেনে দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে হবে তাতে দলের আদর্শবাদীর বাধ্য নয়।
বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগে যা চলেছে তার অধিকাংশই ছিল নেকামি আর আদিখ্যেতা। অনৈতিক সুবিধা নিয়ে যাকে তাকে এমপি, মন্ত্রী, নেতা-নেত্রী বানিয়েছে। আ’লীগকে দাসের দল পরিণত করেছে। কর্মীরা যা গিলতে না চাইতো জোর করেই তা গিলানোর চেষ্টা করা হতো। সার্বজনীন বঙ্গবন্ধুকে ফ্রেমবন্দী করে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের বঙ্গবন্ধু বানানো হয়েছে। ইচ্ছাকৃতই হোক বা অনিচ্ছাকৃতই হোক জাতীয় চার নেতার অবদানকে যথাযথ মূল্যায়ন করে নাই দল। জন্মলগ্ন থেকে যে দলটা ছিল জনতার দল, সেই দলটাকে পারিবারিক ও ব্যাক্তি কেন্দ্রীক দলে পরিণত করা হয়েছে। যার কারণে দূর্নীতির দায় চেপেছে দলটির ঘাড়ে। শেখ হাসিনার হাজারও উন্নয়ন দূর্নীতির কুয়াশায় আচ্ছন্ন রয়েছে। তৃণমূল নেতা কর্মীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা রোধ করা হয়েছে। ওয়ান ম্যান, ওয়ান পরিবারের দল হিসাবে প্রতিষ্ঠত করা হইছিল আওয়ামী লীগকে।  আওয়ামী লীগের স্বর্ণ যুগের দীর্ঘ ১৫ টা বছর সাংগঠনিক ভাবে কোন আদর্শীক কর্মী মূল্যায়িত হয় নাই। এক কথায় দাস প্রথা চালু হয়েছিল এ দলে।
এর ফলে, তৃণমূলে ক্ষোভ বেড়েছে। একক সিদ্ধান্তে দল পরিচালনায় তৃণমূল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। হারিয়েছে সাংগঠনিক শক্তি। দলের স্বর্ণ যুগে একটিও সাংগঠনিক নেতৃত্ব তৈরি করতে পারেনি। উল্টো লাখো আদর্শীক ত্যাগী নেতাকর্মীকে কোনঠাসা করে দল থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। টাকা ছাড়া যোগ্যতার ভিত্তিতে পদ-পদবি পাওয়াকে অঘোষিতভাবে বিলুপ্ত করেছিলো নীতিনির্ধারকরা। যেকারণে নেতাকর্মীরা নিজের ইজ্জত বাঁচাতে, নিজের আদর্শকে বিসর্জন না দিয়ে আওয়ামী সম্পৃক্ততা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে।
ক্ষমতার ১৫ বছরকে আ’লীগের স্বর্ণযুগ বলা হলেও তৃণমূল পর্যায়ের কেউ ক্ষমতার স্বাদ নিতে পারেনি। সুবিধা যা নেয়ার নিয়েছে বিএনপি, জামাত অর্থের বিনিময় ও আত্মীয়তায়। এদেরকে (সুবিধাবাদী) চাকরি, ব্যবসা বাণিজ্য করার সকল প্রকার সুবিধা দিয়েছে এমপি ও মন্ত্রী সহ শেখ পরিবার। হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে এরা। দল বিক্রির ইজারাদার হয়ে গেছিল এমপি, মন্ত্রী ও দলের নেতৃস্থানীয় নেতারা। যে যেভাবে পেরেছে অর্চা অনুযায়ী দল বিক্রি করেছে। দলটাকে সাংগঠনিক শুন্য একটা চাটুকারিতার দলে পরিনত করে ছিল।
জনতার এই দলটিকে যারা অর্চার সম্পত্তিতে পরিণত করেছে, সুবিধাভোগী (পদত্যাগী) ত্যাগীরা কোথায় এখন? মাঠে ময়দানে রাস্তায় মাইর খাচ্ছে কারা? দলীয় প্রধান হিসাবে এর দায় অবশ্যই শেখ হাসিনার। ব্যাক্তি আবেগের উদ্ধে থেকে উনাকেই শোধরাতে হবে। এই সংকটাপন্ন অবস্থা থেকে দলকে সর্বসাধারণে গ্রহনযোগ্য অবস্থায় নিতে তাঁকেই সঠিক পথ বের করতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কণ্যা হিসাবে সর্বসাধারণের এ দলকে আদর্শিক দল হিসেবে পূনঃগঠনের দায়িত্ব বঙ্গবন্ধুর কন্যাকেই নিতে হবে।অন্যথায় আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ধোঁয়াশাচ্ছন্ন।
মন্তব্য: আওয়ামী লীগ যেহেতু প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী দল তাই এ দল শেষ হবার নয়। তবে, নেতৃত্ব নির্বাচনে আবারও যদি অতীতের ভুল পথেই হাটে তাহলে এই দল এক সময়ে দ্বিখণ্ডিত হওয়ার আশংকা উড়িয়ে দেয়া যাবে না

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA